এস,এম,হাবিবুল হাসান :
সাতক্ষীরায় সুপার সাইক্লোন ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবের ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও সদর,কলারোয়া, আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় এখনও পল্লী বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র চার্জ দিতে জেনারেটরের দোকানে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ।
ইঞ্জিনচালিত ভ্যানযোগে জেনারেটর একস্থান থেকে আরেক স্থানে নিয়ে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ পদ্ধতিতে, আবার কেউ কেউ নিজ উদ্যোগে জেনারেটর ভাড়া নিয়ে মোবাইল ফোনসহ ইলেকট্রিক যন্ত্র চার্জ দিয়ে নীরবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে গত ২০ মে থেকে সাতক্ষীরার ৭টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে। আম্ফানের পর সরকারি দফতরগুলোতে সীমিত আকারে পল্লী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও বাসা-বাড়িঘর ও বেসরকারি বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এখনও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ডিজেলচালিত জেনারেটর দিয়ে বিভিন্ন ইলেকট্রিক যন্ত্রের ব্যাটারি চার্জ দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সদর উপজেলার তলুইগাছা গ্রামের সাংবাদিক আব্দুল জলিল জানান, সদর উপজেলার তলুইগাছা, বাঁশদহ, ভবানীপুর, কুশখালী, কাথন্ডা ও বৈকারী এলাকায় এখনও পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
তিনি জানান, জেনারেটর থেকে চার্জ দিতে হলে প্রতিটি বাটন মোবাইল ফোন ১০টাকা, টার্চ মোবাইল ফোন ২০ টাকা, টর্চলাইট ২০ টাকা ও ল্যাপটপ চার্জ দিতে ৪০ টাকা দিতে হচ্ছে জেনারেটর ব্যবসায়ীদের।
তিনি আরো জানান, জেনারেটরে চার্জ দিলে ভোল্টেজ আপডাউনের কারণে অনেকের আবার মোবাইলসহ ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি নষ্টও হচ্ছে।
কলারোয়া উপজেলার কাকডাঙ্গা বাজারের মোখলেছুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার উপর বাড়িতে নেই বিদুৎ। নেই আয়ের উৎস। এই পরিস্থিতিতে আবার মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি চার্জ দিতে প্রতিদিন প্রায় ১শ’ থেকে ১শ’৫০ টাকা খরচ হচ্ছে। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা।
তিনি জানান, কাকডাঙ্গা বাজারের শফি ডেকোরেটার তার নিজের দোকানে জেনারেটর দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ব্যাটারিতে চার্জ দিচ্ছেন। এলাকার বিভিন্ন লোক লাইন দিয়ে দাড়িয়ে আছেন চার্জের জন্য। একই অবস্থা কলারোয়া উপজেলার বোয়ালিয়া মোড়, ফকিরপাড়ার মোড়, শাকদাহ, যুগিখালী, বুইতা, মাদরা, গয়ড়া, বুঝতলা সহ বিভিন্ন এলাকায়।
সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডি.জি.এম (কারিগরী) প্রকৌশলী মাসুম আহম্মেদ জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে সাতক্ষীরা জেলায় ১ হাজার ৭শ’৮২ টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। সংযোগতার ছিঁড়ে গেছে বহু জায়গায়। এই পরিস্থিতিতে সাতক্ষীরার প্রতিটি উপজেলায় বিদ্যুৎ লাইন সংস্কারের কাজ চলছে। তবে কলারোয়া উপজেলায় সব থেকে বেশী বিদ্যুৎ লাইনে ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। দুই এক দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে বলে তিনি আরো জানান।