এস,এম,হাবিবুল হাসান :
সাতক্ষীরায় সুপার সাইক্লোন প্রলয়ংকারী ঘূণিঝড় আম্পানের আঘাতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদে ১শ’৭৬ কোটি ৮০ লাখ ৬৭ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল(বৃহস্পতিবার ২১ মে ও শুক্রবার ২২ মে)রাতে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে এক প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে জেলার ৭টি উপজেলার ৭৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬৪টি ইউনিয়নের প্রাণিসম্পদ ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আম্পানে আক্রান্ত হয়েছে ৩শ’৪০টি গরু, ২ হাজার ৮শ’৭টি ছাগল, ৬শ’৫৬ টি ভেড়া, ৬৬ হাজার ৭শ’৩৫ টি মুরগি এবং ২১টি হাঁস। আম্পানে মৃত্যুবরণ করেছে ৩ হাজার ৮শ’৮০টি গবাদিপশু ও পাখি। এরমধ্যে ১৬টি গরু, ১শ’২৩ ছাগল, ১৮টি ভেড়া, ৩ হাজার ৬শ’৮৮টি মুরগি এবং ৩৫টি হাঁস রয়েছে।
এদিকে, জেলায় সড়ক ও জনপদের ৮১ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৫৭.৫০ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আগে জেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ লাখ ৭০ হাজার ২শ’৬৪ জন মানুষ আশ্রয় গ্রহণ করে।
অপরদিকে,ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে সাতক্ষীরায় ভেসে গেছে ১২ হাজার ২শ’৫৭টি মৎস্য ঘের ও পুকুর। এতে মৎস্য খামারিরা ১শ’৭৬ কোটি ৩ লাখ টাকা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ।
ঘূর্ণিঝড় আম্পানে জেলায় ৭টি উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ১২ হাজার ২শ’৫৭টি মৎস্য ঘের ও পুকুর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে ও জলোচ্ছ্বাসে লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জের ১২টি ইউনিয়নের ১৩ হাজার ৪শ’৭৭ হেক্টর জমির মৎস্য ঘের পানিতে ভেসে গেছে। তিন উপজেলায় ১২ হাজার ২শ’৫৭টি মৎস্য ঘের ও পুকুর ভেসে যেয়ে ১হাজার৬শ’৭৭ মেট্রিক টন সাদা মাছ এবং ২ হাজার ৫শ’৩১ মেট্রিকটন চিংড়ির ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আশাশুনিতে ১হাজার৭৮ মে. টন, কালিগঞ্জে ৩৫ মে. টন ও শ্যামনগরে ৫শ’৬৪ মেট্রিক টন সাদা মাছ এবং আশাশুনিতে ১ হাজার ৬শ’১৮ মেট্রিক টন, শ্যামনগরে ৮শ’৬০ মেট্রিক টন এবং কালিগঞ্জে ৫৩ মেট্রিক টন চিংড়ি মাছের ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সুন্দরবন সংলগ্ন গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী ও কালিগঞ্জ উপজেলার মৎস্য চাষিরা। চিংড়ী বাগদা, গলদা, সাদা পোনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির কোটি কোটি টাকার মাছ ভেসে যাওয়ায় সর্বশান্ত হয়েছেন তারা।