আবু বকর সিদ্দিক : উপজেলার সকল অফিসে যখন কোন সেবা প্রদান করা হচ্ছেনা। তখন উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর অব্যাহত রেখেছে অনলাইনে সেবা। ইতি পূর্বে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সুনির্দিষ্ট লাইনে দাড়িয়ে দুরদুরান্ত থেকে আগত খামারিদের জরুরি প্রাণিচিকিৎসা সেবা নিতেও দেখা গেছে এই দপ্তরে।
জানা যায়, শেরপুর উপজেলায় শতকরা আশি শতাংশ মানুষ প্রানিসম্পদ লালন পালন, উৎপাদন, বিপননের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। করোনা দুর্যোগে সকল সরকারি দপ্তরের দীর্ঘকালিন ছুটি থাকলেও জরুরি সেবা প্রত্যাশী খামারিদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে ব্যাক্তিগত স্বাস্থ্যব্যাবস্থাপনা ঠিক রেখে এক প্রকার ঝুকি নিয়েই জরুরি চিকিৎসাসেবা, ঔষধ ও পরামর্শ অব্যাহত রেখেছেন জাতীয় পর্যায়ে (ব্যাক্তিগত শ্রেনীতে)জনপ্রশাসন পদক প্রাপ্ত ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. রায়হান। ইতোমধ্যেই প্রান্তিক পর্যায়ের প্রায় ২শ জন দরিদ্র খামারিদেরকে নিজ উদ্যোগে(বেতনের টাকায়) রাতের বেলায় বাড়িতে বাড়িতে পৌছে দেন দানাদার গো-খাদ্য, জীবাণুনাশক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মিনি স্প্রেয়ারসহ আপদকালিন ঔষধ। করোনা ভাইরাস বিশে^র সাথে সাথে বাংলাদেশেও মহামারী আকার ধারন করেছে। তাই বেশি লোক সমাগম হলে করোনার ঝুকি আরো বাড়ার আশংকা রয়েছে। তাই অনলাইনে “স্বপ্নছোয়ার সিড়ি” ইউটিউব চ্যানেল, ফেইসবুক পেইজের মাধ্যমেও সেবা প্রদান করছেন উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. রায়হান। ডা. রায়হানের এ সেবাদান কর্মসূচি শেরপুরের এক অনন্য সৃষ্টি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন সচেতন মহল। ঝুকি নিয়ে সেবাদান বিষয়ে জানতে চাইলে ভেটেরিনারি সার্জন ডা. রায়হান পিএএ বলেন, নিরাপদ পুষ্টির যোগানদাতা ও কর্মসংস্থানের জনগুরত্বপুর্ণ এই খাত এবং খাতটির সাথে সম্পৃক্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই জীবনের ঝুকি নিয়ে জরুরি চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রেখেছি। এখন করোনা ভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করায় মোবাইল ফোনে, অনলাইনে “স্বপ্নছোয়ার সিড়ি” ইউটিউব চ্যানেল, ফেইসবুক পেইজের মাধ্যমেও সেবা প্রদান করছি। উল্লেখ্য যে শেরপুর উপজেলায় ডেইরি খামারের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার যেখান থেকে দুধ উৎপাদন হয় প্রায় ষোল হাজার লিটার। রয়েছে, হৃষ্টপুষ্ট খামার, দেশি মুরগির বানিজ্যিক অরগানিক খামার, ব্রয়লার, সোনালী, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, কবুতর, কোয়েল, পোষাপ্রাণি, গাড়লের খামার যার সাথে নির্ভরশীল প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার পরিবার। করোনা দুর্যোগে খামারিদের উৎপাদিত পন্য সঠিকভাবে বাজারজাত না করতে পারায় খামারিরা কিছুটা বিপাকের সন্মুখিন।
সরকারি ভাবে খামারিদের প্রনোদনা দিয়ে অপার সম্ভাবনাময় শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন খামারিরা। নইলে আবারো বেকার হয়ে পড়বে হাজারও শিক্ষিত যুবকরা।