এম এ কাদির চৌধুরী ফারহান, মৌলভীবাজার: করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় ভূমিকায় ভূমিকা পালন করছেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন।
বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে জনজিবন ব্যাহত, আর সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে দিন মজুরেরা, আর এই দিনমজুরদের মুখে হাসি ফোটাতে ও তাদের মধ্যে জনসচেতনা বৃদ্ধির লক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
দরিদ্র, কর্মহীন বেকার ও অসচ্চল পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী বিতরনসহ করোনো ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব তৈরিতে সাধারণ মানুষকে বিনা কারণে ঘর থেকে বের হওয়া রোধ ও বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণে শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন।
দরিদ্র, কর্মহীন বেকার ও অসচ্ছল পরিবার যারা করোনার প্রকোপে সংকটকালীন সময়ে বেকার হয়ে পড়েছেন তাদের জন্যে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ২০ হাজার পরিবারের মধ্যে ২শ’ মেট্রিক টন চাল ও ১১ লক্ষ টাকার নগদ সহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের নিজস্ব অর্থায়নে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করা হয়েছে। মৌলভীবাজারে করোনায় বিশেষ বরাদ্ধ ৩ শ মে.টন চাল ও ১২ লাখ টাকা।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় এখানে আরো ৬ শ ৭৫ মে. টন খাদ্য ও নগদ ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা মজুদ রাখা হয়েছে। এছাড়া জেলায় করোনা চিকিৎসায় সংশ্লিষ্টদের মাঝে ৫শ’ ১২টি পিপিই ও ৮ হাজার ৪শ’টি মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে জেলায় করোনায় আক্রান্ত বা মৃত্যুর ঘটনা না থাকা সত্ত্বেও এ রোগের চিকিৎসায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সব রকম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় সদরে ২৫০ শয্যা হাসপাতালসহ ৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ১টি সিএস অফিসে ১৩৩টি বিশেষ বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। করোনা চিকিৎসার কাজে ১৩২ জন চিকিৎসক ও ১৭৭ জন নার্সকে নিয়োজিত রাখা হয়েছে। সদর হাসপাতাল ও সিএস অফিসে করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ঔষুধ পিপিই মজুদ রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত বা মৃত্যুর ঘটনা না থাকলেও ১লা মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ৬২১ ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। যাদের বেশীর ভাগই বিদেশ ফেরৎ। এর মধ্যে ৩৩৭ জনের মধ্যে সংক্রমনের উপস্থিতি না পাওয়ায় তাদের কায়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ২৩৬৭ জন বিদেশ প্রত্যাগত হলেও ২৪৯ জন প্রত্যাগতের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। জেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে এদের ঠিকানা ও অবস্থান চিহ্নিত করণে কার্যক্রম চলছে।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন বলেন, করোনা মোকাবেলায় সরকারী নির্দেশনায় জেলা প্রশাসন থেকে সবরকম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। সরকারী ভাবে কর্মহীন এবং দরিদ্র পরিবারগুলোকে সরকারীভাবে নগদ অর্থ সহায়তা ও খাদ্য সরবরাহ দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কেউ আক্রান্ত বা মৃত্যুবরণ না করলেও এর বিস্তার ঠেকাতে আমাদের সবাইকে সরকারী নির্দেশনা মেনে ঘরের মধ্যে অবস্থান করতে হবে।