ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের দিঘীয়া গ্রামে যত দুর দৃষ্টি যায় শুধু হলদে আর হলদে রং। যেন একনজর তাকিয়ে থাকি। গ্রামটি এখন সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত হয়ে উঠেছে। এই গ্রামে মধু সংগ্রহ করতে মৌ-চাষীরা সরিষার ক্ষেতের পাশেই বসিয়েছে মৌচাক বাক্স। তাই এলাকাবাসী গ্রামটির নাম দিয়েছেন সরিষার গ্রাম।
রাণীশংকৈল কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় এবার সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮’শ ৫০ হেক্টর। কিন্তু লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে। উপজেলায় এবার ৫ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের দিঘীয়া গ্রামেই প্রায় ৭০ একর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। কৃষকরা বারি সরিষা-১৪, ১৫ বিনা সরিষা ৪, ৯ জাতের সরিষা আবাদ করছে।
স্থানীয় কৃষক জানায়, রেকর্ড পরিমাণ সরিষার চাষ এ গ্রামে এবারেই প্রথম। আগে ধান তুলে গম, ভুট্টা আবাদ করা হতো। তবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের পরামর্শে এবার দীঘিয়া গ্রামের প্রায় ৭০ একর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ বিঘা জমির সরিষার বীজ বিনামূলে ১৫ জন কৃষকের মাঝে বিতরণ করেন উপজেলা কৃষি অফিস। সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ারও সম্ভবনা দেখছেন কৃষক।
দিঘীয়া গ্রামের কৃষক মনসুর আলী বলেন, আগে ধান, গমে আবাদ করতাম, কৃষি অফিসারদের পরামর্শে এবার জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। যা ২-৩ হাজার টাকা খরচ করে বিঘা প্রতি ৭-৮ মণ করে সরিষা উত্তোলন করা যায়। আর বাজারে ২ হাজার থেকে ২২’শ টাকা মণ বিক্রি করতে পারি। একই কথা বলেন রমজান আলীসহ অনেকে।
অন্যদিকে এ উপজেলায় ব্যাপক হারে সরিষার আবাদ হওয়ায় মৌ-চাষী সোহেল রানা দিঘীয়া এলাকায় ১২০টি মৌচাক বাক্স বসিয়ে সপ্তাহে দু-মণের অধিক খাঁটি মধু সংগ্রহ করছেন। প্রতি কেজি মধু ৩৫০ থেকে ৪শ টাকায় তিনি বিক্রি করছেন। শীতের এই মৌসুমে গ্রামের মানুষেরা নির্ভেজাল খাঁটি মধু হাতের নাগালে পাওয়ায় খুশিতে আতœহারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ জানান, সরিষা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল, এলাকার মানুষ সেটা তেমন বুঝতো না। আমরা তাদের হাতে কলমে বুঝিয়ে দিচ্ছি। সে কারণে উপজেলায় ব্যাপকভাবে সরিষার আবাদ হয়েছে।