ঢাকা ০৫:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বগুড়ার সান্তাহারে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ একজন গ্রেপ্তার জেলা যুবলীগের আয়োজনে ইফতার বিতরণ আদমদীঘিতে স্বামী স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট মামলায় আরো দুইজন গ্রেফতার আদমদীঘিতে ট্রাকের ধাক্কায় একজন নিহত সিরাজদিখানে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে শিক্ষকদের করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ধুনট থিয়েটারের আয়োজনে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বগুড়ায় ঔষধ বাজারে সয়লাব বিক্রি নিষিদ্ধ ফিজিশিয়ান স্যাম্পলে সিরাজগঞ্জে বিশ্ব নাট্য দিবস পালিত মনন সাহিত্য সংগঠনের পাক্ষিক অধিবেশন এবং ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বগুড়ায় সিএনজি চালিত গাড়ির সিলিন্ডার রি-টেস্টিং শতভাগ নিশ্চিত করা সময়েরদাবী গোমস্তাপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত সিরাজদিখানে অপ্পো শো-রুমের শুভ উদ্বোধন! সিরাজদিখানে নাশকতার মামলায় আওয়ামী লীগের দুই নেতা গ্রেফতার! পীরগঞ্জে পুকুরের পানিতে নিষ্পাপ দুই শিশুর মৃত্যু! নওগাঁয় নারী উদ্যোক্তার পুকুরে কীটনাশক প্রয়োগ করে লক্ষাধিক বগুড়া শেরপুরে নতুন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের যোগদান শেরপুরে ভয়াবহ বন্যায় সাত জনের মৃত্যু! বগুড়া জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত ঠাকুরগাঁওয়ে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো জেলা ইজতেমা ঠাকুরগাঁওয়ে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো জেলা ইজতেমা পদ্মপুকুর ইউনিয়নে বিশেষ স্ত্রীরোগ ও মাতৃস্বাস্থ্য সেবা পেল প্রায় ১০০ জন সুবিধাবঞ্চিত নারী

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আবশ্যকতা

জিয়াউল হক সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক:
  • আপডেট সময় : ১২:২০:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪ ১০৬ বার পড়া হয়েছে

আওয়ামী লীগের ইতিহাসে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দু’টি ঘটনাকে বড় করে দেখা হয়। একটি ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সাল। যেদিন স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন স্ব-ভূমে প্রত্যাবর্তন।

২৬ মার্চ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে পাকজান্তার হাতে বন্দী হয়ে দীর্ঘ নয় মাস পশ্চিম পাকিস্তানের অন্ধকার কারাগারে বন্দী ছিলেন। আর একটি তারই বড় তনয়া স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কারিগর গণতন্ত্রের মানসকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। যিনি পরিবারের সকলকে হারিয়ে দীর্ঘ ছ’বছর ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আশ্রিত ছিলেন। এ-দুটির বাহিরে আরও একটি প্রত্যাবর্তনকে আওয়ামী লীগ গুরুত্ব দেয় তা হল ২০০৭ সালের ৭ মে’কে। যেদিন মঈন ইউ আহম্মেদ ও ফখরুদ্দিন আহম্মেদ এর মাইনাস টু ফর্মুলার ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন।

বঙ্গবন্ধু কন্যা কেন দেশে ফিরলেন? তার দেশে ফেরার আবশ্যকতা কি? তিনি না ফিরলে দেশের এমন ক্ষতি হতো? এ-নিয়ে ইতিপূর্বে বিস্তার আলোচনা হয়েছে।

ভবিষ্যতে আরও হবে বোধকরি। ১৫ আগষ্ট ১৯৭৫ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। এই দিনে খুনিরা স্বাধীনতার মহা নায়ককে নির্বংশ করে দেয়। তাও আবার নিজ দেশের কতিপয় পথভ্রষ্ট উচ্চাভিলাষী সাবেক ও বর্তমান সেনার হাতে। যে মহান মানুষটি স্বাধীনতার জন্য নিজের জীবনকেই বাজি ধরেছিলেন। সেই তিনিই কি-না তারই অনুগতের হাতে জীবন দিলেন। যে নেতা জীবনের বৃহৎ সময় কাটিয়েছেন পাক কারাগারে। দীর্ঘ কারাবাসে পাক শাসকগোষ্ঠী যাকে প্রাণে মারার দুঃসাহস দেখায়নি।

আর তাকেই কি-না প্রাণ দিতে হলো স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির ইন্ধনে স্ব-জাতী বেঈমানদের হাতে! ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট হতে ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যবর্তী ছয় বছর আওয়ামী লীগ একটি কঠিন সময় পার করেছে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে খুনিরা খন্দকার মোশতাককে পুতুল রাষ্ট্রপতি করে রাখে। রাষ্ট্র মূলত চালাত মোশতাকের সতীর্থ ডালিম রশিদ গং। তারা বঙ্গভবনে অবস্থান করে ক্ষমতার কলকাঠি নাড়াতেন। আর সে অনুযায়ী ফরমান জারি করতেন ঢাকের কায়া মোশতাক। সে-সময় আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন ও ক্ষমতার মসনদকে পাকাপোক্ত করতে সামনে বাঁধা ছিল বঙ্গবন্ধুর সতীর্থ জাতীয় চারনেতা। খুনি ডালিম রশিদদের প্রত্যক্ষ ইন্দনে বঙ্গবন্ধুর মতো তাদেরকেও কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করে। দেশকে পাকিস্তানী ভাবধারায় ফিরিয়ে দিতে কূ’র পরে কূ ঘটিয়ে দেশকে টালমাটাল করে দেয়। তখন সুযোগ বুঝে ক্ষমতার শীর্ষে পৌছান আরেক সাইলেন্ট কিলার জেনারেল জিয়াউর রহমান। তিনিও সামরিক কূ ঘটিয়ে মসনদ দখলে নেন।

পূর্বসূরীদের মতো জেনারেল জিয়াও আওয়ামী লীগের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেওয়ার মিশনে নামেন। সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কমপক্ষে পাঁচ লক্ষাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার ও গুম করেন। হত্যা করেন মুক্তিযোদ্ধাদের। পরিস্থিতি এমন ছিল যে আওয়ামী লীগের নাম নেওয়া প্রায় গুনাহ পর্যায়ের অপরাধ বলে গন্য হতো। সেই দুঃসময়ে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে, দেশের স্বাধীনতাকে পুনঃউদ্ধার করতে ও পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে শেখ হাসিনা স্বদেশে ফিরে আসার মনস্তাপ করেন।

তার স্বদেশে ফেরার প্রক্রিয়াও ওতোটা মৃসন ছিল না। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শেখ হাসিনার ফেরার পথে পদে পদে কন্টকায়ন করে রাখেন। যাতে তিনি সহজে স্বদেশে ফিরতে না পারেন। কিন্তু জনরোষের মুখে জিয়ার ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন হয়ে যায়।

ষড়যন্ত্রকারিদের মুখে চপেটাঘাত করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বিকাল সাড়ে তিন ঘটিকায় ইন্ডিয়ান বোয়িং বিমানে তিনি পিতার রক্তস্নাত স্বদেশের মাটিতে পা রাখেন। সেদিন প্রকৃতিও সকল জঞ্জাল সরাতে শত কিলোমিটার বেগে ঝড়ের অবতারণা করেন। সেই ঝড় উপেক্ষা করে ১৫ লক্ষাধিক মানুষ গগনবিদারী স্লোগানে প্রিয় নেত্রীকে বরণ করে নেন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে শেখ হাসিনা দেশে না ফিরলে কি হতো? আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে কিছুই হতো না। আবার অনেক কিছুই হতে পারতো। আর কি’বা হতে বাদ ছিল? ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দেশ বেহাত হয়েছিল। স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য ভূলুণ্ঠিত করেছিল। যুদ্ধাপরাধীকে প্রধানমন্ত্রী করেছিল। বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার বটবৃক্ষকে উপরে ফেলা হয়েছিল। মানুষের মৌলিক অধিকারকে কুক্ষিগত করা হয়েছিল। নাগরিকের কন্ঠরোধ করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তাচ্ছিল্য করা হয়েছিল।

সর্বপোরি বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন ক্ষুধা, দারিদ্র্য মুক্ত সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মানের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যেত। তার সাথে অধরা থেকে যেতো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ। সামরিক শাসকের অবসান।

জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা। তিনি দেশে না ফিরলে আমরা ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের রূপান্তরের ধারনা পেতাম না। পেতাম না বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, সাবমেরিন ক্যাবল, মেট্রোরেল, পদ্মাসেতু, যমুনা রেলসেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র,নদীর তলদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ, চারলেন ও আট লেনের হাইওয়ে রাস্তা,বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব, মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি লাভ। প্রসঙ্গক্রমে বলা যায় শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের জন্য ফরজে আইন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ads

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আবশ্যকতা

আপডেট সময় : ১২:২০:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

আওয়ামী লীগের ইতিহাসে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দু’টি ঘটনাকে বড় করে দেখা হয়। একটি ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সাল। যেদিন স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন স্ব-ভূমে প্রত্যাবর্তন।

২৬ মার্চ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে পাকজান্তার হাতে বন্দী হয়ে দীর্ঘ নয় মাস পশ্চিম পাকিস্তানের অন্ধকার কারাগারে বন্দী ছিলেন। আর একটি তারই বড় তনয়া স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কারিগর গণতন্ত্রের মানসকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। যিনি পরিবারের সকলকে হারিয়ে দীর্ঘ ছ’বছর ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আশ্রিত ছিলেন। এ-দুটির বাহিরে আরও একটি প্রত্যাবর্তনকে আওয়ামী লীগ গুরুত্ব দেয় তা হল ২০০৭ সালের ৭ মে’কে। যেদিন মঈন ইউ আহম্মেদ ও ফখরুদ্দিন আহম্মেদ এর মাইনাস টু ফর্মুলার ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন।

বঙ্গবন্ধু কন্যা কেন দেশে ফিরলেন? তার দেশে ফেরার আবশ্যকতা কি? তিনি না ফিরলে দেশের এমন ক্ষতি হতো? এ-নিয়ে ইতিপূর্বে বিস্তার আলোচনা হয়েছে।

ভবিষ্যতে আরও হবে বোধকরি। ১৫ আগষ্ট ১৯৭৫ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। এই দিনে খুনিরা স্বাধীনতার মহা নায়ককে নির্বংশ করে দেয়। তাও আবার নিজ দেশের কতিপয় পথভ্রষ্ট উচ্চাভিলাষী সাবেক ও বর্তমান সেনার হাতে। যে মহান মানুষটি স্বাধীনতার জন্য নিজের জীবনকেই বাজি ধরেছিলেন। সেই তিনিই কি-না তারই অনুগতের হাতে জীবন দিলেন। যে নেতা জীবনের বৃহৎ সময় কাটিয়েছেন পাক কারাগারে। দীর্ঘ কারাবাসে পাক শাসকগোষ্ঠী যাকে প্রাণে মারার দুঃসাহস দেখায়নি।

আর তাকেই কি-না প্রাণ দিতে হলো স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির ইন্ধনে স্ব-জাতী বেঈমানদের হাতে! ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট হতে ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যবর্তী ছয় বছর আওয়ামী লীগ একটি কঠিন সময় পার করেছে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে খুনিরা খন্দকার মোশতাককে পুতুল রাষ্ট্রপতি করে রাখে। রাষ্ট্র মূলত চালাত মোশতাকের সতীর্থ ডালিম রশিদ গং। তারা বঙ্গভবনে অবস্থান করে ক্ষমতার কলকাঠি নাড়াতেন। আর সে অনুযায়ী ফরমান জারি করতেন ঢাকের কায়া মোশতাক। সে-সময় আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন ও ক্ষমতার মসনদকে পাকাপোক্ত করতে সামনে বাঁধা ছিল বঙ্গবন্ধুর সতীর্থ জাতীয় চারনেতা। খুনি ডালিম রশিদদের প্রত্যক্ষ ইন্দনে বঙ্গবন্ধুর মতো তাদেরকেও কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করে। দেশকে পাকিস্তানী ভাবধারায় ফিরিয়ে দিতে কূ’র পরে কূ ঘটিয়ে দেশকে টালমাটাল করে দেয়। তখন সুযোগ বুঝে ক্ষমতার শীর্ষে পৌছান আরেক সাইলেন্ট কিলার জেনারেল জিয়াউর রহমান। তিনিও সামরিক কূ ঘটিয়ে মসনদ দখলে নেন।

পূর্বসূরীদের মতো জেনারেল জিয়াও আওয়ামী লীগের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেওয়ার মিশনে নামেন। সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কমপক্ষে পাঁচ লক্ষাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার ও গুম করেন। হত্যা করেন মুক্তিযোদ্ধাদের। পরিস্থিতি এমন ছিল যে আওয়ামী লীগের নাম নেওয়া প্রায় গুনাহ পর্যায়ের অপরাধ বলে গন্য হতো। সেই দুঃসময়ে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে, দেশের স্বাধীনতাকে পুনঃউদ্ধার করতে ও পিতার স্বপ্ন পূরণ করতে শেখ হাসিনা স্বদেশে ফিরে আসার মনস্তাপ করেন।

তার স্বদেশে ফেরার প্রক্রিয়াও ওতোটা মৃসন ছিল না। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শেখ হাসিনার ফেরার পথে পদে পদে কন্টকায়ন করে রাখেন। যাতে তিনি সহজে স্বদেশে ফিরতে না পারেন। কিন্তু জনরোষের মুখে জিয়ার ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন হয়ে যায়।

ষড়যন্ত্রকারিদের মুখে চপেটাঘাত করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বিকাল সাড়ে তিন ঘটিকায় ইন্ডিয়ান বোয়িং বিমানে তিনি পিতার রক্তস্নাত স্বদেশের মাটিতে পা রাখেন। সেদিন প্রকৃতিও সকল জঞ্জাল সরাতে শত কিলোমিটার বেগে ঝড়ের অবতারণা করেন। সেই ঝড় উপেক্ষা করে ১৫ লক্ষাধিক মানুষ গগনবিদারী স্লোগানে প্রিয় নেত্রীকে বরণ করে নেন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে শেখ হাসিনা দেশে না ফিরলে কি হতো? আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে কিছুই হতো না। আবার অনেক কিছুই হতে পারতো। আর কি’বা হতে বাদ ছিল? ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দেশ বেহাত হয়েছিল। স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য ভূলুণ্ঠিত করেছিল। যুদ্ধাপরাধীকে প্রধানমন্ত্রী করেছিল। বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার বটবৃক্ষকে উপরে ফেলা হয়েছিল। মানুষের মৌলিক অধিকারকে কুক্ষিগত করা হয়েছিল। নাগরিকের কন্ঠরোধ করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তাচ্ছিল্য করা হয়েছিল।

সর্বপোরি বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন ক্ষুধা, দারিদ্র্য মুক্ত সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মানের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যেত। তার সাথে অধরা থেকে যেতো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ। সামরিক শাসকের অবসান।

জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা। তিনি দেশে না ফিরলে আমরা ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের রূপান্তরের ধারনা পেতাম না। পেতাম না বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, সাবমেরিন ক্যাবল, মেট্রোরেল, পদ্মাসেতু, যমুনা রেলসেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র,নদীর তলদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ, চারলেন ও আট লেনের হাইওয়ে রাস্তা,বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব, মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি লাভ। প্রসঙ্গক্রমে বলা যায় শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের জন্য ফরজে আইন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।