রাষ্ট্র মেরামতে বাংলাদেশ লেবার পার্টির ২৩ দফা প্রস্তাবনা ঃ
- আপডেট সময় : ০৬:০১:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ৩৫ বার পড়া হয়েছে
১। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে।
২। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে হবে।
৩। পরপর ২ বারের বেশি একই ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
৪। বিশেষজ্ঞগণের সমন্বয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে উচ্চ কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা প্রবর্তন করতে হবে।
৫। সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন, শুনানির মাধ্যমে সংসদীয় কমিটির ভোটিং সাপেক্ষে এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিতে হবে।
৬। সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের অবসরের ৫ বছরের মধ্যে নির্বাচনের অংশ গ্রহণ বেআইনী ঘোষণা করতে হবে।
৭। পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা স্থায়ী করতে হবে। বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করণ, মামলা জট নিরসন ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে।
৮। জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী দল বা জোটকে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে কাস্টিং ভোটের ৫১% ভোট প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে, অন্যথায় নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে।
৯। সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ী ও প্লট প্রাপ্তির সুবিধা বাতিল করতে হবে। সংসদ সদস্যদের স্বাধীন মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করতে হবে।
১০। বর্তমান ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’ সংশোধন করতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে স্ব স্ব উপজেলা ও জেলা নির্বাচন অফিসারকে নিয়োগের বিধান প্রবর্তন ও বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।
১১। নির্বাচনে প্রার্থী কর্তৃক পোষ্টার ব্যানার ফেষ্টুন ও বিলবোর্ড দিয়ে প্রচার নিষিদ্ধ করে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে কমন পোষ্টার, মাইকিং ও ইউনিয়ন, উপজেলা ও মহানগরে ওয়ার্ড পর্যায়ে নাগরিক সভা বা প্রার্থী পরিচিতি সভা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে সকল প্রার্থীদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
১২। বন্ধ মিল কল-কারখানা চালু করে কর্মসংস্থান তৈরী, মুদ্রাস্ফীতির আলোকে শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত ও রেশনিং পদ্ধতি চালু, বেকার তালিকা প্রণয়ন ও ভাতা প্রদান করতে হবে।
১৩। কৃষিতে ভর্তূকী বৃদ্ধি, সার-কীটনাশক, যন্ত্রাংশের মুল্য নিয়ন্ত্রণ ও উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে।
১৪। রাস্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনকারী চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ এম.পি, মন্ত্রী, আমলা, কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও অবৈধ সম্পদ রাস্ট্রীয় কোষাগারে জব্দ করতে হবে। অর্থপাচার রোধ ও দুর্নীতির অনুসন্ধান করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং সংবিধান অনুযায়ী ন্যায়পাল নিয়োগ করতে হবে। সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ইউনিভার্সাল হিউম্যান রাইটস চার্টার অনুযায়ী মানবাধিকার সংরক্ষণ করতে হবে।
১৫। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ খাতে দায়মুক্তি আইনসহ সব কালাকানুন বাতিল, মূল্য নির্ধারণে গণশুনানী বাধ্যতামূলক করতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বকেয়া বিল আদায়ে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
১৬। বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে। বাংলাদেশ ভূখন্ডের মধ্যে কোনো রকম সন্ত্রাসী তৎপরতা বরদাশত না করা, কোনো সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়া যাবে না।
১৭। দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সুসংগঠিত, যুগোপযোগী এবং সর্বোচ্চ দেশপ্রেমের চেতনায় উজ্জীবিত করে গড়ে তুলতে হবে। সীমান্ত হত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
১৮। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে নিবিড় জরিপের ভিত্তিতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের তালিকা প্রণয়ন এবং তাদের যথাযথ মর্যাদা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে। সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন করতে হবে।
১৯। যুব সমাজের ভিশন ও চিন্তা-চেতনাকে ধারণ করে আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন ও নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকারত্ব দূর করতে হবে। বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে স্বল্প খরচে বিদেশে কর্মসংস্থান, দূতাবাসে হয়রানি রোধ ও প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
২০। ছাত্র ও শিক্ষকদের রাজনীতির একটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। তাদের রাজনীতি ও সাংগঠনিক কর্মকান্ডে শিক্ষার মানোন্নয়নের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রাজনীতি সীমিত করতে হবে।
২১। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ। জাতীয় সংসদে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নারীদের গুরুত্ব দেয়া এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
২২। ডাক্তারদের ভিজিট পুনঃনির্ধারণ, অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ও পরীক্ষার সুপারিশ করলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎককে জরিমানার বিধান, বেসরকারী চিকিৎসা শিক্ষা, সেবা ও ওষুধ প্রশাসনে যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন করে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করণ। সকল প্রকার ঔষধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি অতিমূল্যায়িত রয়েছে। তাই কাঁচামাল ও উৎপাদন, বিপনণ ব্যয় বিবেচনা করে ঔষধের মূল্য পূণঃ নির্ধারণ করতে হবে।
২৩। যানজট নিরসনে সংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল সচল। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রশিক্ষণ, কাউন্সিলিং, ড্রাইভিং লাইসেন্স সহজীকরণ ও সড়ক বিভাজন নির্মাণ করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় দোষী ব্যক্তির শাস্তি মৃত্যুদন্ড করতে হবে।