ঢাকা ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আদমদীঘিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম বাস্তবায়নে সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত আদমদীঘি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য জাহিদুল বারীর ইন্তেকাল আদমদীঘিতে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে লিফলেট বিতরণ ওয়াইডব্লিউসিএ- এর আয়োজনে “রাইজ আপ” প্রকল্পের এ্যাডভোকেসি সেমিনার অনুষ্ঠিত স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আর ফ্যাসিবাদী সহযোগীর মিলনে গণতন্ত্র পুরিপুষ্ট হবে না- শামসুজ্জামান দুদু আদমদিঘীতে জেঁকে বসেছে শীত কাহিল হয়ে পরেছে ছিন্নমূলসহ সববয়সী মানুষ আদমদীঘিতে গাঁজাসহ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ক্ষমতায় গেলে ১২ মাস কৃষকের মুখে হাসি থাকবে -হাসান জাফির তুহিন আজ ”আরুশ”এর জন্মদিন আদমদীঘিতে ৬ মাদক সেবনকারীর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড

মাছের প্রজননে সময় না দিয়ে মানুষ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

স্টাফরিপোটার
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৭:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৪১ বার পড়া হয়েছে

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার বলেছেন, হাওরের মাছ প্রকৃতির দান। প্রকৃতির বিরুদ্ধাচারণ করে মাছের প্রজননের জন্য নির্দিষ্ট সময় না দিয়ে মানুষ ভোক্তা ও আহরণকারী হিসেবে অত্যন্ত দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে।

শনিবার সকালে সিলেট নগরীর সুবিদবাজারস্থ খাঁনস্ প্যালেস কনভেনশন হলে “হাওরে মৎস্যসম্পদ রক্ষায় স্টেকহোল্ডারস কনসাল্টেশন ওয়ার্কশপ” এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেছেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, হাওরে মাছের গতিপথে অপরিকল্পিত বাধ দিয়ে ও রাস্তা নির্মাণ করে মাছের বিচরণ ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরে দেশীয় প্রজাতিগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে।

মৎস্যসম্পদ রক্ষায় যারা মাছ ধরছেন তাদের ভূমিকা অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এখন মৎস্যজীবীর আগে প্রকৃত মৎস্যজীবী, অরিজিনাল মৎস্যজীবী-এরকম যে ভাষা চলে আসছে-এটার মানে হচ্ছে এ পেশায় যারা নিয়োজিত তাদের প্রতি অনেক অন্যায় করা হয়েছে। যারা সত্যিকারের মৎস্যজীবী তাদেরকে মূল্যায়ন করা হয়নি। অতি মুনাফাকারীরা ব্যবসার নামে মাছের ক্ষতি করেছে। এজন্য প্রকৃত মৎস্যজীবীদের স্বার্থ সংরক্ষণে দেশীয় প্রজাতির মাছ করা অত্যন্ত দরকার। মাছ ধরা পেশাকে আধুনিকায়ন করতে হবে, যাতে তারা সম্মানের সাথে বাঁচতে পারেন।

মাছের প্রজননকালীন মাছ ধরতে নিষিদ্ধের বিষয়ে হাওর অঞ্চলে বিলবোর্ড ও রেডিও-টেলিভিশনে এ সংক্রান্ত প্রচারণা করা যেতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাওর অঞ্চলে মাছ ধরার নিষিদ্ধের পাশাপাশি পর্যটনও এসময়ে নিষিদ্ধ করতে হবে।

এসময় বক্তারা বলেন, হাওরে মৎস্যসম্পদ রক্ষায় হাওর ম্যনেজমেন্ট এ্যাকশন প্ল্যান করে মা মাছ রক্ষা এবং মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। তারা হাওরে সঠিক ব্যবস্হাপনার জন্য মৎস্যজীবীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আরও সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। ইজারাভিত্তিক ব্যবস্হাপনার পরিবর্তে মৎস্যজীবীদের দ্বারা হাওর ব্যবস্হাপনা এবং মৎস্যজীবীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণের জন্য তারা আহ্বান জানান।

উন্মুক্ত আলোচনায় সিলেট বিভাগের সাত জেলার মৎস্যজীবী প্রতিনিধিরা বলেছেন, মাছের প্রজনন সমস্যা হচ্ছে। অনেক প্রজাতি বিলুপ্তি হয়েছে। আরো প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। ফসল রক্ষায় বাঁধের কারণে মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। অধিক কীটনাশক ব্যবহার, হাওরের ইজারা প্রথা, সেচ দিয়ে মাছ শিকারসহ বিভিন্ন কারণে হাওরের মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। মাছ ডিম কম দিচ্ছে ও সব ডিম থেকে বাচ্চাও ফুটছে না। বিভিন্ন জাল দিয়ে মৎস্য শিকার করা হচ্ছে। এ অবস্হা থেকে রক্ষা পেতে তারা বিলগুলো খনন, জাল নিষিদ্ধ, ফসলী জমিতে মাত্রাতিরক্ত কীটনাশক ব্যবহার কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। তারা আষাঢ়-জৈষ্ঠ্য মাসে মা মাছ ধরা নিষেধের ওপর গুরুত্বারোপ করে নিষিদ্ধকালীন মৎস্যজীবীদের সরকারি সহায়তা দেয়ার আহ্বান জানান ।

মৎস্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগ আয়োজিত-মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ.টি.এম. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেছেন, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী এনডিসি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, সিলেট বিভাগের জেলা প্রশাসকবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, বিভাগের বিভিন্ন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, মৎস্যজীবীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, দেশের উত্তর-পূর্বাংশে ৭টি জেলার ৪৭টি উপজেলা নিয়ে হাওরাঞ্চল গঠিত। এর মধ্যে সুনামগঞ্জে ৯৫, সিলেটে ১০৫, হবিগঞ্জে ১৪, মৌলভীবাজারে ৩, নেত্রকোণায় ৫২, কিশোরগঞ্জে ৯৭ এবং ব্রাম্মণবাড়িয়ায় ৭টি মিলে মোট ৩৭৩ টি হাওর রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ads

মাছের প্রজননে সময় না দিয়ে মানুষ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০৬:৩৭:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার বলেছেন, হাওরের মাছ প্রকৃতির দান। প্রকৃতির বিরুদ্ধাচারণ করে মাছের প্রজননের জন্য নির্দিষ্ট সময় না দিয়ে মানুষ ভোক্তা ও আহরণকারী হিসেবে অত্যন্ত দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে।

শনিবার সকালে সিলেট নগরীর সুবিদবাজারস্থ খাঁনস্ প্যালেস কনভেনশন হলে “হাওরে মৎস্যসম্পদ রক্ষায় স্টেকহোল্ডারস কনসাল্টেশন ওয়ার্কশপ” এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেছেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, হাওরে মাছের গতিপথে অপরিকল্পিত বাধ দিয়ে ও রাস্তা নির্মাণ করে মাছের বিচরণ ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরে দেশীয় প্রজাতিগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে।

মৎস্যসম্পদ রক্ষায় যারা মাছ ধরছেন তাদের ভূমিকা অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, এখন মৎস্যজীবীর আগে প্রকৃত মৎস্যজীবী, অরিজিনাল মৎস্যজীবী-এরকম যে ভাষা চলে আসছে-এটার মানে হচ্ছে এ পেশায় যারা নিয়োজিত তাদের প্রতি অনেক অন্যায় করা হয়েছে। যারা সত্যিকারের মৎস্যজীবী তাদেরকে মূল্যায়ন করা হয়নি। অতি মুনাফাকারীরা ব্যবসার নামে মাছের ক্ষতি করেছে। এজন্য প্রকৃত মৎস্যজীবীদের স্বার্থ সংরক্ষণে দেশীয় প্রজাতির মাছ করা অত্যন্ত দরকার। মাছ ধরা পেশাকে আধুনিকায়ন করতে হবে, যাতে তারা সম্মানের সাথে বাঁচতে পারেন।

মাছের প্রজননকালীন মাছ ধরতে নিষিদ্ধের বিষয়ে হাওর অঞ্চলে বিলবোর্ড ও রেডিও-টেলিভিশনে এ সংক্রান্ত প্রচারণা করা যেতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাওর অঞ্চলে মাছ ধরার নিষিদ্ধের পাশাপাশি পর্যটনও এসময়ে নিষিদ্ধ করতে হবে।

এসময় বক্তারা বলেন, হাওরে মৎস্যসম্পদ রক্ষায় হাওর ম্যনেজমেন্ট এ্যাকশন প্ল্যান করে মা মাছ রক্ষা এবং মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। তারা হাওরে সঠিক ব্যবস্হাপনার জন্য মৎস্যজীবীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আরও সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। ইজারাভিত্তিক ব্যবস্হাপনার পরিবর্তে মৎস্যজীবীদের দ্বারা হাওর ব্যবস্হাপনা এবং মৎস্যজীবীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণের জন্য তারা আহ্বান জানান।

উন্মুক্ত আলোচনায় সিলেট বিভাগের সাত জেলার মৎস্যজীবী প্রতিনিধিরা বলেছেন, মাছের প্রজনন সমস্যা হচ্ছে। অনেক প্রজাতি বিলুপ্তি হয়েছে। আরো প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। ফসল রক্ষায় বাঁধের কারণে মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। অধিক কীটনাশক ব্যবহার, হাওরের ইজারা প্রথা, সেচ দিয়ে মাছ শিকারসহ বিভিন্ন কারণে হাওরের মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। মাছ ডিম কম দিচ্ছে ও সব ডিম থেকে বাচ্চাও ফুটছে না। বিভিন্ন জাল দিয়ে মৎস্য শিকার করা হচ্ছে। এ অবস্হা থেকে রক্ষা পেতে তারা বিলগুলো খনন, জাল নিষিদ্ধ, ফসলী জমিতে মাত্রাতিরক্ত কীটনাশক ব্যবহার কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। তারা আষাঢ়-জৈষ্ঠ্য মাসে মা মাছ ধরা নিষেধের ওপর গুরুত্বারোপ করে নিষিদ্ধকালীন মৎস্যজীবীদের সরকারি সহায়তা দেয়ার আহ্বান জানান ।

মৎস্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগ আয়োজিত-মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ.টি.এম. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেছেন, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী এনডিসি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, সিলেট বিভাগের জেলা প্রশাসকবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, বিভাগের বিভিন্ন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, মৎস্যজীবীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, দেশের উত্তর-পূর্বাংশে ৭টি জেলার ৪৭টি উপজেলা নিয়ে হাওরাঞ্চল গঠিত। এর মধ্যে সুনামগঞ্জে ৯৫, সিলেটে ১০৫, হবিগঞ্জে ১৪, মৌলভীবাজারে ৩, নেত্রকোণায় ৫২, কিশোরগঞ্জে ৯৭ এবং ব্রাম্মণবাড়িয়ায় ৭টি মিলে মোট ৩৭৩ টি হাওর রয়েছে।