পর্দার আড়ালে নায়ক স্থানীয় চেয়ারম্যান!
ভবানীপুর হাট, রক্ষক যেখানে ভক্ষক সরকারি সম্পত্তি হরিলুট
- আপডেট সময় : ০৫:৪০:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৫৭ বার পড়া হয়েছে
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর হাটের সরকারি জায়গায় অনুমতি ছাড়াই অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে দোকান ঘর নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর হাটের।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) থেকে শুরু করে সোমবার (৮ এপ্রিল) পর্যন্ত চার দিন সরেজমিনে যেয়ে পাওয়া যায়, শেরপুরের প্রত্যন্ত এলাকা ভবানীপুর হাটের উন্মুক্ত জায়গা দখল নিয়ে দুটি সেডের নিচে ২৪ টি সেমি পাকা টিনশেড দোকান ঘর নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।
উক্ত ইউনিয়নের প্রভাবশালী চেয়ারম্যান এই নির্মাণ কাজ পরিচালনা করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা এবং কর্মরত রাজমিস্ত্রিরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বঞ্চিত ব্যবসায়ীর অভিযোগ, প্রভাবশালী চেয়ারম্যান নিজ ক্ষমতাবলে তার নিজস্ব লোক দিয়ে টাকা নিয়ে কতিপয় ব্যবসায়ীকে ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন। তাতে ওই স্থানে ব্যবসা করছিলো আমার মতো এমন অনেকেই দোকানঘর বরাদ্ধ পায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, হাটের একটি অংশের একজন সাব-ইজারাদার জানান এবং দোকান ঘর বঞ্চিত ব্যবসায়ীরা জানান ২৪টি দোকান ঘরের পজেশন বাবদ কোটি টাকারও বেশি বাণিজ্য করেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান। এরপর পজেশন ক্রেতারা নিজেদের খরচে নির্মান করছে এই দোকানঘরগুলো। চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি এতটাই প্রভাবশালী যে, এলাকার কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে ভবানীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দোকান ঘরগুলো উপজেলা পরিষদের হাটবাজার উন্নয়ন বরাদ্দ থেকে করা হচ্ছে ।
অপরদিকে উপজেলা পরিষদে যোগাযোগ করলে,২৪ টি দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোছা.শামসুন্নাহার শিউলি জানান এটি আমার জানামতে কোন প্রকল্পের ভেতরে নেই।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার জুলহাস জানান ভবানীপুর হাটে দুটি প্রকল্প রয়েছে একটি এলজিইডি’র ভবন নির্মাণ আরেকটি ওপেন সেড। টিনশেডের। নতুন দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়টি আমার প্রকল্পের মধ্যে নয়।
জানতে চাইলে ভবানীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। আমি নিজে এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)এস এম রেজাউল করিম নির্মান কাজ বন্ধ রাখার জন্য চেয়ারম্যানকে বললেও কাজ চলমান রয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)এস এম রেজাউল করিম বলেন দোকান ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাজ চলছে বলে আমার জানা নেই আমি খোঁজ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন জিহাদী বলেন, হাটের জায়গায় দোকান ঘর নির্মাণ হচ্ছে কিনা আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে ভবানীপুর হাট আমি অপদখলমুক্ত করতে চাই। অবশ্যই দ্রুত পদক্ষেপ নেব।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, এমন বিষয় আমার জানা নেই আমি এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।