ঢাকা ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আদমদীঘিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম বাস্তবায়নে সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত আদমদীঘি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য জাহিদুল বারীর ইন্তেকাল আদমদীঘিতে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে লিফলেট বিতরণ ওয়াইডব্লিউসিএ- এর আয়োজনে “রাইজ আপ” প্রকল্পের এ্যাডভোকেসি সেমিনার অনুষ্ঠিত স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আর ফ্যাসিবাদী সহযোগীর মিলনে গণতন্ত্র পুরিপুষ্ট হবে না- শামসুজ্জামান দুদু আদমদিঘীতে জেঁকে বসেছে শীত কাহিল হয়ে পরেছে ছিন্নমূলসহ সববয়সী মানুষ আদমদীঘিতে গাঁজাসহ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ক্ষমতায় গেলে ১২ মাস কৃষকের মুখে হাসি থাকবে -হাসান জাফির তুহিন আজ ”আরুশ”এর জন্মদিন আদমদীঘিতে ৬ মাদক সেবনকারীর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড

বগুড়ায় বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের মামলা

স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট সময় : ১০:৪৮:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫ ১০৪ বার পড়া হয়েছে

বগুড়ার ধুনট মহিলা কলেজের সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ এস.এম জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে কলেজ তহবিল থেকে অর্ধকোটির বেশি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হায়দার আলী বাদী হয়ে বগুড়ার বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।

 

মামলার এজাহার ও কলেজ সূত্রে জানা যায়, এস.এম জিয়াউল হক উপজেলার কুমারিয়াডাঙ্গা গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর ধুনট মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। তৎকালীন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের যোগসাজসে বগুড়া-৫ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবর রহমানকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে এস.এম জিয়াউল হক অধ্যক্ষ পদ বাগিয়ে নেন। কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগদানের পর থেকেই সরকারি দলের প্রভাব খাটিয়ে জিয়াউল হক নানা দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে কলেজ তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ শুরু করেন। হয়রানিমূলক মামলায় ফাঁসিয়ে শায়েস্তার হুমকি দেয়ায় কেউ তার এই অপকর্মের প্রতিবাদ করার সাহস পাননি। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের বিচার চেয়ে কলেজে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। পরে ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, কলেজে যোগদানের পর থেকে জিয়াউল হক শিক্ষক কর্মচারীদের টিউশন ফির ৭ লাখ ১০ হাজার ২৫২ টাকা, সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির নামে ১৩ জন প্রভাষকের কাছ থেকে ১ লাখ ১১ হাজার টাকা, চুরির অপবাদ দিয়ে নৈশপ্রহরীর কাছ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, গোপনে পুরাতন কাগজপত্র বিক্রয়ের অপবাদ দিয়ে কর্মচারীদের কাছ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা, অডিটের নামে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শিক্ষার্থী ভর্তি ফি, বোর্ড পরীক্ষার ফরম পূরণ, পরীক্ষার প্রশংসাপত্র ও ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে আদায় করা ১০ লাখ টাকাসহ অন্যান্য আয়ের ৫২ লাখ ২৬ হাজার ২০০ টাকা আত্মসাত করেছেন। অধ্যক্ষের দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে কলেজের শিক্ষকদের সমন্বয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়। এই কমিটি তাদের তদন্তে অধ্যক্ষ জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পেয়ে মামলার সুপারিশ করে।

মামলার বাদী ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হায়দার আলী বলেন, জিয়াউল হক অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনকালে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্ধকোটির অধিক টাকা আত্মসাত করেছেন। কেউ প্রতিবাদ করলেই চাকরিচ্যুতিসহ হয়রানিমূলক মামলার হুমকিধামকি দিতেন তিনি। ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

কলেজ পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি ও পৌর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আল আমিন বলেন, এস.এম জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে কলেজ তহবিল থেকে অর্ধকোটির অধিক টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ জিয়াউল হক বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে সব ধরনের অভিযোগ মিথ্যা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ads

বগুড়ায় বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের মামলা

আপডেট সময় : ১০:৪৮:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫

বগুড়ার ধুনট মহিলা কলেজের সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ এস.এম জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে কলেজ তহবিল থেকে অর্ধকোটির বেশি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হায়দার আলী বাদী হয়ে বগুড়ার বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।

 

মামলার এজাহার ও কলেজ সূত্রে জানা যায়, এস.এম জিয়াউল হক উপজেলার কুমারিয়াডাঙ্গা গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর ধুনট মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। তৎকালীন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের যোগসাজসে বগুড়া-৫ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবর রহমানকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে এস.এম জিয়াউল হক অধ্যক্ষ পদ বাগিয়ে নেন। কলেজে অধ্যক্ষ পদে যোগদানের পর থেকেই সরকারি দলের প্রভাব খাটিয়ে জিয়াউল হক নানা দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে কলেজ তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ শুরু করেন। হয়রানিমূলক মামলায় ফাঁসিয়ে শায়েস্তার হুমকি দেয়ায় কেউ তার এই অপকর্মের প্রতিবাদ করার সাহস পাননি। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষের বিচার চেয়ে কলেজে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। পরে ২০২৪ সালের ১৯ আগস্ট তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, কলেজে যোগদানের পর থেকে জিয়াউল হক শিক্ষক কর্মচারীদের টিউশন ফির ৭ লাখ ১০ হাজার ২৫২ টাকা, সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির নামে ১৩ জন প্রভাষকের কাছ থেকে ১ লাখ ১১ হাজার টাকা, চুরির অপবাদ দিয়ে নৈশপ্রহরীর কাছ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, গোপনে পুরাতন কাগজপত্র বিক্রয়ের অপবাদ দিয়ে কর্মচারীদের কাছ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা, অডিটের নামে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শিক্ষার্থী ভর্তি ফি, বোর্ড পরীক্ষার ফরম পূরণ, পরীক্ষার প্রশংসাপত্র ও ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে আদায় করা ১০ লাখ টাকাসহ অন্যান্য আয়ের ৫২ লাখ ২৬ হাজার ২০০ টাকা আত্মসাত করেছেন। অধ্যক্ষের দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে কলেজের শিক্ষকদের সমন্বয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়। এই কমিটি তাদের তদন্তে অধ্যক্ষ জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পেয়ে মামলার সুপারিশ করে।

মামলার বাদী ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হায়দার আলী বলেন, জিয়াউল হক অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনকালে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্ধকোটির অধিক টাকা আত্মসাত করেছেন। কেউ প্রতিবাদ করলেই চাকরিচ্যুতিসহ হয়রানিমূলক মামলার হুমকিধামকি দিতেন তিনি। ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

কলেজ পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি ও পৌর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আল আমিন বলেন, এস.এম জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে কলেজ তহবিল থেকে অর্ধকোটির অধিক টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ জিয়াউল হক বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে সব ধরনের অভিযোগ মিথ্যা।