নোটিশ দেওয়ার পরও ভাঙা হয়নি দুতলা পল্লী ভবন মার্কেট
- আপডেট সময় : ০৬:৫৫:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪০ বার পড়া হয়েছে
নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থানের স্থাপনাগুলো। অভিযোগ স্থানীয় কিছু দখলদারদের বাঁধার মুখে আর প্রশাসনের পদক্ষেপের অভাবে নির্ধারিত ওই স্থানটি ঠিকাদারকে বুঝে দিতে পারছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে এখনও শুরু হয়নি নির্মাণ কাজ। তাই নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কুজাইল হাটের নির্ধারিত স্থানে বরাদ্দকৃত দুতলা ওই ভবন দ্রæত নির্মাণ চান স্থানীয়রা। এদিকে হাটে আধুনিক মানের বহুতল ভবন নির্মাণের খবরে উচ্ছ¡সিত সবাই। ইতিমধ্যেই নোটিশ পাওয়ার পর ভবন নির্মাণের স্থান থেকে দুই একজন তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিচ্ছেন। অপরদিকে নির্ধারিত স্থানে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাইমেনা শারমীন। সূত্রে জানা যায়, দেশব্যাপী গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী কুজাইল হাটে চারতলা ফাউন্ডেশনে দুতলা পল্লী মার্কেট ভবন নির্মাণ কাজের দরপত্র আহবান করা হয়। ওই ভবরেন নিচতলায় কাঁচা বাজার এবং উপর তলায় দোকান ঘর নির্মাণ হবে। যার প্রাক্কলিত মুল্য ধরা হয় ৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। কাজটি পায় মেসার্স সাহারা কনস্ট্রাকশন-ইএসবি নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ভবনের নির্মাণ কাজটি চলতি বছরের ১৯ মে শুরু হয়ে ২০২৫ সালের ৩০ আগষ্ট শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু বাধ সাঁধে কতিপয় স্থানীয় কিছু দখলদাররা। কারণ তারা দীর্ঘদিন ধরে হাটের জায়গা দখলে নিয়ে কেউ গোডাউন করেছে আবার কেউ বড় বড় দোকানঘর নির্মাণ করে রেখেছে। তাই তারা বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করছে, তাদের অবৈধ স্থাপনাগুলো যেন ভাঙা না যায়। যার কারণে স্থানীয় কিছু দখলদাররা তাদের স্থাপনাগুলো রক্ষার জন্য উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া নোটিশকেও বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখাচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে স্থাপনাগুলো অপসারণের জন্য নোটিশ দেওয়া হলেও, আজও তারা স্থাপনাগুলো সরায়নি। তাই আজও শুরু করতে পারেনি দুতলা ওই পল্লী ভবনের নির্মাণ কাজ। যার কারণে ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়নের প্রকল্প। এদিকে হাটের দীর্ঘদিনের জরাজীর্ন অবস্থা থেকে মুক্ত করে আধুনিক ছোঁয়া দিতে এই বহুতল ভবন নির্মাণের কোন বিকল্প নেই বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। আতাইকুলা গ্রামের গুড়া ব্যবসায়ী ফজেল সরদার বলেন, প্রায় ২০বছর যাবত কুজাইল হাটে ব্যবসা করে আসছি। নতুন ভবন নির্মাণের নির্ধারিত স্থানে থাকা তার ব্যবস্য প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। আমি চাই দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ হোক। কিন্তু কিছু কুচক্রী ব্যক্তিরা ভবন নির্মাণ কাজকে বন্ধ করার পাঁয়তারা করছেন। কোন বাধাকেই তোয়াক্কা না করে দ্রুতই নতুন ভবনটির পূর্ণাঙ্গ নির্মাণ কাজ শুরু করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ফজেল সরদার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানান, এই ভবন নির্মাণ হলে, সেখানে আরও কয়েকজন অসহায় পরিবার ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। বর্তমানে সেখানে হাতে গোনা কয়েকজন গোডাউন ও বড় বড় স্থাপনা করে ব্যবসা করছেন। তাই তারা নিজেদের স্বার্থে উন্নয়নমূলক এই কাজে বাঁধা দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। উপজেলা প্রশাসনের উচিত হবে, আইনগতভাবে কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে এই ভবন নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু করা। কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: মোকলেছুর রহমান বাবু জানান, যেকোন উন্নয়ন মূলক কাজকে স্বাগত জানানো উচিত। কিন্তু কুজাইল হাটের নির্ধারিত স্থানে বরাদ্দ হওয়া পল্লী ভবন মার্কেটটি নিমার্ণে স্থানীয় কিছু কুচক্রী ব্যক্তিরা নানা ষড়যন্ত্র করে আসছেন। কারণ ওই ব্যক্তিদের কেউ অবৈধ ভাবে স্থায়ী ভাবে গোডাউন করেছেন। আবার কেউ কেউ সরকারী নিময়কে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ইট-সিমেন্ট দিয়ে বড় বড় দোকানঘর নির্মাণ করে রেখেছেন। তারাই তাদের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধার সৃষ্টি করছেন। তবে প্রশাসনের সহযোগিতায় দ্রুতই আমরা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করবো। সরকারের জায়গায় সরকারি উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে কেউ বাধাগ্রস্থ করার ক্ষমতা রাখে না। সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি করতে হাটটির আধুনিকায়ন এবং হাটে দোকান করে শতাধিক মানুষদের জীবন মানের আরো উন্নয়নের জন্য এই বহুতল ভবন নির্মাণের কোন বিকল্প নেই। জানতে চাইলে মেসার্স সাহারা কনস্ট্রাকশন-ইএসবি নামক প্রতিষ্ঠানের প্রোজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার ইমরুল কায়েস ইমন মুঠোফোনে বলেন, ভবন নির্মাণের কাজটি জটিলতার কারণে শুরু করতে পারিনি। এই জন্য এলজিডি অফিসে দুই দফায় আবেদন করেছি। তারা সীমানা বুঝে দিলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করে নির্ধারিত সময়ে শেষ করবো।
উপজেলা প্রকৌশলী মো: ইসমাইল হোসেন বলেন, আমরা কাজটি শুরু করার চেষ্টা করছি। কিন্তু ওই বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর বাঁধার কারণে ঠিকাদারকে এখনও নির্ধারিত স্থান বুঝে দিতে পারিনি। বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাইমেনা শারমীন মুঠোফোনে বলেন, সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প সরকারি নির্ধারিত স্থানেই হবে। কোন জায়গায় হবে সেটা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হয়ে এসেছে। কাজেই ইচ্ছা করলেই এটা অন্য জায়গায় সরানো সম্ভব না। তাই বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া এমন উন্নয়মূলক কাজে বাধা না দিয়ে সঠিক ভাবে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার প্রতি আহবান জানান তিনি।