ঢাকা ০৭:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে হবে

স্টাফরিপোটার
  • আপডেট সময় : ০৭:২৯:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৩০ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে হবে বলে জাতীয় রাষ্ট্রচিন্তা পরিষদের বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।

আজ ২৩ নভেম্বর ২০২৪ (শনিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরম খাঁ হলে বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আবদুল লতিফ মাসুমের সভাপতিত্বে “বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন : কার্যকর ও টেকসই সংস্কার” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়৷

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়’র উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন’র স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটির সূচনা হয়।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ নজরুল ইসলাম। প্রবন্ধে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা বলে দেয় যে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ এর যথাক্রমে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। পুরো নির্বাচনটি পরিচালনা করে সরকারের নির্বাহী বিভাগের লোকেরা-আমলাতান্ত্রিক প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ ও সরকারি/বেসরকারি কর্মচারীবৃন্দ। ক্ষমতাসীন সরকার ও দল ক্ষমতায় থেকে নির্বাচনে পরাজয় বরণ করতে একদম নারাজ। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তারা পরাজয় মেনে নিতে অনিচ্ছুক। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার/অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এর বিকল্প নেই।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে সংস্কারের বেশ কিছু ক্ষেত্র বিবেচনা করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, আইনি সংস্কার এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য পদ্ধতিগত পরিবর্তন।


জাতীয় রাষ্ট্রচিন্তা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম তার বক্তব্যে বলেন, ‘২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের মতো পাতানো নির্বাচনে মানুষ ভোটাধিকার হারিয়েছে, নির্বাচন কমিশনকে সেই অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতার এই বিপ্লবে রক্তের নদী বইয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালানোর পর ফ্যাসিস্ট নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করার জন্য তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনকে এ পরিবর্তন করতে হবে। অতীতের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়েই প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এগুতে হবে।

সেমিনারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের চেয়ারম্যান মেজবাহ উল-আজম সওদাগর বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সাথে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মিশে গেছে। জনগণের মধ্যে এ ধারণা শক্তিশালী যে কখনোই দলীয় সরকারের মাধ্যমে সুস্থ নির্বাচন সম্ভব নয়।


সেমিনারটিতে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক ফজল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম ও সাবেক সচিব শেখ মোতাহার হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান’র সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মাঝে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক স ম আলী রেজা, অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম, শাহ আবদুল হালিম ও অধ্যাপক এ. বি এম মাহবুবুল ইসলাম প্রমুখ ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ads

নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে হবে

আপডেট সময় : ০৭:২৯:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে হবে বলে জাতীয় রাষ্ট্রচিন্তা পরিষদের বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।

আজ ২৩ নভেম্বর ২০২৪ (শনিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরম খাঁ হলে বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আবদুল লতিফ মাসুমের সভাপতিত্বে “বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন : কার্যকর ও টেকসই সংস্কার” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়৷

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়’র উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন’র স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটির সূচনা হয়।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ নজরুল ইসলাম। প্রবন্ধে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা বলে দেয় যে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ এর যথাক্রমে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়। পুরো নির্বাচনটি পরিচালনা করে সরকারের নির্বাহী বিভাগের লোকেরা-আমলাতান্ত্রিক প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ ও সরকারি/বেসরকারি কর্মচারীবৃন্দ। ক্ষমতাসীন সরকার ও দল ক্ষমতায় থেকে নির্বাচনে পরাজয় বরণ করতে একদম নারাজ। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তারা পরাজয় মেনে নিতে অনিচ্ছুক। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার/অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এর বিকল্প নেই।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে সংস্কারের বেশ কিছু ক্ষেত্র বিবেচনা করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, আইনি সংস্কার এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য পদ্ধতিগত পরিবর্তন।


জাতীয় রাষ্ট্রচিন্তা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম তার বক্তব্যে বলেন, ‘২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের মতো পাতানো নির্বাচনে মানুষ ভোটাধিকার হারিয়েছে, নির্বাচন কমিশনকে সেই অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতার এই বিপ্লবে রক্তের নদী বইয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালানোর পর ফ্যাসিস্ট নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করার জন্য তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনকে এ পরিবর্তন করতে হবে। অতীতের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়েই প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এগুতে হবে।

সেমিনারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের চেয়ারম্যান মেজবাহ উল-আজম সওদাগর বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সাথে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মিশে গেছে। জনগণের মধ্যে এ ধারণা শক্তিশালী যে কখনোই দলীয় সরকারের মাধ্যমে সুস্থ নির্বাচন সম্ভব নয়।


সেমিনারটিতে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক ফজল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম ও সাবেক সচিব শেখ মোতাহার হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান’র সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মাঝে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক স ম আলী রেজা, অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম, শাহ আবদুল হালিম ও অধ্যাপক এ. বি এম মাহবুবুল ইসলাম প্রমুখ ।