নিউ আত্রাই ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করে দিলেন সিভিল সার্জন — নওগাঁ
- আপডেট সময় : ১১:৫৭:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪ ৪৮ বার পড়া হয়েছে
নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলা সদরে দীর্ঘদিন ধরে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই চলতে থাকে এই নিউ আত্রাই ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার। নামে ক্লিনিক হলেও এখানে ছিল না কোন সেবা দানের উপযুক্ত পরিবেশ। যেখানে প্রতিনিয়তই ঘটেছে নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা, এমনকি ঘটেছে মানুষ মারা যাওয়ার মত ঘটনাও। অনিয়ম ও অসঙ্গতির নানা অভিযোগের ভিত্তিতে,গত সেপ্টেম্বর মাসের ১০ তারিখে নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ নজরুল ইসলাম ও আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসার ডাঃ রোকসানা হ্যাপির উপস্থিতিতে ক্লিনিকটিতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় তিনি অনিয়ম ও অভিযোগের সত্যতা পান।এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর সেবা দানের পরিবেশ তথা ক্লিনিকের ভেতরেই সেফটি ট্যাংক লক্ষ্য করেন।পাশাপাশি ক্লিনিকে সিজারিয়ান রোগী থাকলেও নিয়ম অনুযায়ী ক্লিনিকে কোন ডাক্তারের দেখা মিলে না। এমনকি ক্লিনিকে চারজন ডিপ্লোমা নার্স থাকার কথা থাকলেও কোন নার্সের দেখা মিলে না। এ সময় সিভিল সার্জন ডাঃ নজরুল ইসলাম ক্লিনিক এর প্রধান সোহরাবের কাছে ক্লিনিক চালানোর বৈধ কাগজ দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেন না। এ সময় সিভিল সার্জন নওগাঁ ১৫ দিনের লিগ্যাল নোটিশ দিয়ে ক্লিনিকের বৈধ কাগজ ও ক্লিনিকে ডাক্তার,নার্সের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলেন এবং সেবা দানের গুণগত পরিবেশ নিশ্চিত করতে বলেন। লিগ্যাল নোটিশের ১৫ দিন শেষে বৈধ কাগজ দেখাতে ব্যর্থ হলে,সিভিল সার্জন নওগাঁ ক্লিনিকটিকে সিলগালা করে দেয়ার নির্দেশ দেন।নির্দেশনা অনুযায়ী আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসার ডাঃরোকসানা হ্যাপি ক্লিনিক টিকে সিলগালা করে দেন। উল্লেখ থাকে যে গত ১৯ জুলাই শুক্রবার ২০২৪ তারিখে পাপিয়া (২৫) নামের এক সিজারিয়ান রোগী সেখানে ভর্তি হয়। সেখানে আবাসিক কোন ডাক্তার নেই, ভাড়া করা ডাক্তার মোঃ আকরাম হোসেন সেই দিন বিকেল ০৪.১০ এ সিজার অপারেশন করেন। এবং অপারেশন শেষে তিনি চলে যান এমনকি সেলাই পর্যন্ত করেন না। পরবর্তীতে ক্লিনিকের কথিত ডাক্তাররা সেলাই করেন। পরের দিন ২০ জুলাই শনিবার সকাল ০৯ টায় রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়। কোনভাবেই জ্ঞান ফেরাতে না পেরে, ক্লিনিক এর কথিত ডাক্তার মোঃ সাগর, পরিচালক মোঃ বেলাল হোসেন, স্বত্বাধিকারী মোঃ সোহরাব হোসেন রোগীকে রাজশাহী নিয়ে যেতে বলেন। রোগীর আত্মীয়-স্বজন রোগীকে অজ্ঞান অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্স যোগে “রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল” এ নিয়ে ভর্তি করেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কর্তব্যরত ডাক্তার বলেন, রোগীর অবস্থা খুব আশঙ্কা জনক এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। এখনই রক্ত দিতে হবে। তার কিছুক্ষণ পরেই রক্ত দেয়ার আগেই রোগী মারা যায়। পাপিয়ার জন্ম দেয়া একদিনের মেয়ে বাচ্চাটিকে নিয়ে পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে,” রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল”এর ডেথ সার্টিফিকেটে দেখা যায়, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে এবং সিজার অপারেশনের সময় রোগীর শরীরে রক্ত না দেয়ায় এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এই ভুয়া ক্লিনিকটি বন্ধ হওয়াতে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী সচেতন মহল স্বাস্থ্য প্রশাসনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এবং ডাঃ রোকসানা হ্যাপি মহোদয়ের এমন উদ্যোগকে সবাই স্বাগত জানিয়েছেন এবং তাদের দাবি ক্লিনিক নামের এমন কসাইখানা যেন আর না গড়ে ওঠে সেই সাথে তারা এই ভুয়া ক্লিনিকের সাথে যারা জড়িত তাদের শাস্তি দাবী করেন।