ঢাকা ০৬:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

নওগাঁ গোনা হাই স্কুলে মানববন্ধনের নামে স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পেটালো বহিরাগতরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৫৯:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪ ৩৭ বার পড়া হয়েছে

 

নওগাঁর রাণীনগরে প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের নামে স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পিটিয়েছে বহিরাগতরা। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) উপজেলার গোনা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনায় চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবর একাধিক লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছেন প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকলেছুর রহমান জানান, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে স্কুলের সহকারী শিক্ষক ও স্থানীয় বিএনপি নেতা ইলিয়াস হোসেন মিঠু এবং গোনা গ্রামের বাসিন্দা ও রাণীনগর মহিলা কলেজের নৈশ্যপ্রহরী শহিদুল ইসলাম সুইটের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অনুষ্ঠিত কর্মসূচির প্রথম দিকে তেমন অংশগ্রহণকারী না থাকায় কিছু বহিরাগত লোকজন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই স্কুলে প্রবেশ করে এবং শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার করার কথা বলে। এ সময় শিক্ষার্থীরা যেতে না চাইলে বহিরাগতদের মারপিটে চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়। পরে বহিরাগতরা প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারীর কক্ষে তালা ঝুলিয়ে বন্ধ করে দেয়। ঘটনার পর আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তিনি আরও জানান এমন কর্মকাণ্ডে বিদ্যালয়ে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয় এবং ভাবমূর্তি চরমভাবে নষ্ট হয়েছে। যে কেউ কারো বিরুদ্ধে যেকোনো ধরণের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে পারেন। কিন্তু কর্মসূচির নামে একটি বিদ্যালয়ে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ মেনে নেওয়া যায় না। আমি এমন নৈরাজ্যের আইনগত ব্যবস্থা নিতে বুধবার কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছি। আমি আশাবাদী দ্রুতই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে কর্তৃপক্ষ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেবেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাহিদুল ইসলাম। তার ভাষ্যে, মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে সেখানে অংশগ্রহণের জন্য মিঠু স্যার ডাকছেন বলে বহিরাগতরা বাইরে থেকে ডাক দেয়। শিক্ষার্থীরা যেতে না চাইলে ৫ থেকে ৬ জন বহিরাগত স্কুলে প্রবেশ করে তাদের মারধর শুরু করে। এ সময় নবম শ্রেণির চারজন শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হলে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসা গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার রাতে আহত শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে যায়। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন মিঠু মোবাইলফোনে জানান, তারা তাদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবেই করেছেন। কিন্তু কারা স্কুলে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের মারপিট করেছে এবং কক্ষে তালা দিয়েছে সেই বিষয়টি তার জানা নেই। রাণীনগর থানার ওসি তারিকুল ইসলাম জানান, এমন ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ সদস্য পাঠিয়ে পরিবেশ শান্ত করা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের মারপিট করা এবং কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া কাজটি মোটেও ঠিক হয়নি। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে বহিরাগতরা প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের মারপিট করে আহত করবে এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক কাজ। আয়োজকরা তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে গিয়ে স্কুলের কেউ বাধা দিলে সেক্ষেত্রে বিষয়টি অন্য দিকে যেতো। কিন্তু এভাবে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই হুট করে একটি বিদ্যালয়ে বহিরাগতরা প্রবেশ করে হট্টগোলের সৃষ্টি করবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমি এমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন জানান। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ওই বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে স্কুলে বহিরাগতরা অনুপ্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের মারপিট এবং কক্ষে তালা লাগিয়েছে এমন বিষয় জানা নেই। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ads

নওগাঁ গোনা হাই স্কুলে মানববন্ধনের নামে স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পেটালো বহিরাগতরা

আপডেট সময় : ১২:৫৯:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪

 

নওগাঁর রাণীনগরে প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের নামে স্কুলে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পিটিয়েছে বহিরাগতরা। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) উপজেলার গোনা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনায় চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবর একাধিক লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছেন প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকলেছুর রহমান জানান, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে স্কুলের সহকারী শিক্ষক ও স্থানীয় বিএনপি নেতা ইলিয়াস হোসেন মিঠু এবং গোনা গ্রামের বাসিন্দা ও রাণীনগর মহিলা কলেজের নৈশ্যপ্রহরী শহিদুল ইসলাম সুইটের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অনুষ্ঠিত কর্মসূচির প্রথম দিকে তেমন অংশগ্রহণকারী না থাকায় কিছু বহিরাগত লোকজন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই স্কুলে প্রবেশ করে এবং শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার করার কথা বলে। এ সময় শিক্ষার্থীরা যেতে না চাইলে বহিরাগতদের মারপিটে চারজন শিক্ষার্থী আহত হয়। পরে বহিরাগতরা প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারীর কক্ষে তালা ঝুলিয়ে বন্ধ করে দেয়। ঘটনার পর আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তিনি আরও জানান এমন কর্মকাণ্ডে বিদ্যালয়ে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয় এবং ভাবমূর্তি চরমভাবে নষ্ট হয়েছে। যে কেউ কারো বিরুদ্ধে যেকোনো ধরণের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে পারেন। কিন্তু কর্মসূচির নামে একটি বিদ্যালয়ে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ মেনে নেওয়া যায় না। আমি এমন নৈরাজ্যের আইনগত ব্যবস্থা নিতে বুধবার কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছি। আমি আশাবাদী দ্রুতই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে কর্তৃপক্ষ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেবেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাহিদুল ইসলাম। তার ভাষ্যে, মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে সেখানে অংশগ্রহণের জন্য মিঠু স্যার ডাকছেন বলে বহিরাগতরা বাইরে থেকে ডাক দেয়। শিক্ষার্থীরা যেতে না চাইলে ৫ থেকে ৬ জন বহিরাগত স্কুলে প্রবেশ করে তাদের মারধর শুরু করে। এ সময় নবম শ্রেণির চারজন শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হলে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসা গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার রাতে আহত শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে যায়। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ইলিয়াস হোসেন মিঠু মোবাইলফোনে জানান, তারা তাদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবেই করেছেন। কিন্তু কারা স্কুলে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের মারপিট করেছে এবং কক্ষে তালা দিয়েছে সেই বিষয়টি তার জানা নেই। রাণীনগর থানার ওসি তারিকুল ইসলাম জানান, এমন ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ সদস্য পাঠিয়ে পরিবেশ শান্ত করা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের মারপিট করা এবং কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া কাজটি মোটেও ঠিক হয়নি। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে বহিরাগতরা প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের মারপিট করে আহত করবে এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক কাজ। আয়োজকরা তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে গিয়ে স্কুলের কেউ বাধা দিলে সেক্ষেত্রে বিষয়টি অন্য দিকে যেতো। কিন্তু এভাবে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই হুট করে একটি বিদ্যালয়ে বহিরাগতরা প্রবেশ করে হট্টগোলের সৃষ্টি করবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমি এমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন জানান। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ওই বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে স্কুলে বহিরাগতরা অনুপ্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের মারপিট এবং কক্ষে তালা লাগিয়েছে এমন বিষয় জানা নেই। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।