ঢাকা ১১:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত আদমদীঘিতে হেরোইন সহ এক নারী মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার সাতক্ষীরা ট্রাক ট্রাকংকলরী শ্রমিক ইউনিয়নের একপেশে ও পাতানো নির্বাচনের অভিযোগ নওগাঁয় বহুল আলোচিত যুবদল নেতা হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন জয়পুরহাট আক্কেলপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় এক ট্রাক্টর চালক নিহত হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলার মধ্যে পালিত হল সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস পালিত ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক হবে প্রতিবেশীর মতো: বগুড়ায় সারজিস আলম আদমদীঘি সাঁওইল হাটবাজারে শীতবস্ত্র বেচাকেনা জমতে শুরু করেছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে পদোন্নোতি পেলেন শিবগঞ্জের ইউ এন ও আদমদীঘি উপজেলা প্রশাসন ও কলেজ শিক্ষকদের মাঝে প্রীতি ভলিবল টুর্ণামেন্ট

নওগাঁয় সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলার হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের খাবারের বরাদ্দ কম থাকায় চরম দুর্ভোগে রোগীরা

নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১০:৩৬:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪ ৩৮ বার পড়া হয়েছে

নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রোগীর তুলনায় খাবারের বরাদ্দ কম থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের। কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতাল ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও খাবারের বরাদ্দ এখনো ১০০ জনেরই রয়ে গেছে। ফলে যাদেরকে দেখে একটু অসহায় মনে হয় কেবল তাদেরকেই খাবার সরবরাহ করা হয়। সোমবার (১৯ আগস্ট) সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, এদিন দুপুরে রোগীদের খেতে দেওয়া হয় মাছ, ভাত এবং সবজি। হাসপাতালের দেওয়া পথ্যের তালিকা অনুযায়ী মাছের জাত এবং সবজি ঠিক থাকলেও ভাতের সঙ্গে ছিল চালের অসঙ্গতি। পথ্য তালিকা অনুযায়ী রোগীদেরকে খাওয়ানোর কথা জিরা অথবা কাটারিভোগ জাতের চালের ভাত। কিন্তু হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায় রোগীদের খাওয়ানো হচ্ছে স্বর্ণা-৫ জাতের চালের ভাত। নওগাঁ শহরের মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাসুমা আক্তার। ৬৫ বছর বয়সি বৃদ্ধা মাকে চিকিৎসার জন্য সাত দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করান।মাসুমা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, মাকে নিয়ে সাত দিন থেকে হাসপাতালে ভর্তি আছি। এই সাতদিনে কোনো প্রকার খাবার হাসপাতাল থেকে পাইনি। রাজশাহী বা অন্য জায়গাতেও চিকিৎসার সময় দেখেছি হাসপাতাল থেকে খবার দেয়। এই রুমে যতগুলো রোগী আছে এই কয়দিনে কেউই খাবার পাননি। আমাদের বাসা না হয় কাছে, তিনবার খাবার আনতে পারি। কিন্তু যারা দূরের, তারাতো একদম অসহায় অবস্থায় আছে।ষষ্ঠ তলার ৬০৮নং বেডে হার্টের সমস্যা নিয়ে বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলা থেকে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৭০ বছর বয়সী সায়তুন খাতুন। তার সঙ্গে থাকা মেয়েরও একই অভিযোগ। তিনি বলেন, চারদিন যাবত মাকে নিয়ে হাসপাতালে আছি। কোনো ধরনের খাবার পাইনি। নওগাঁ সদর উপজেলার হাসাইগাড়ী ইউনিয়নের কাটখইল গ্রামের বাসিন্দা জাহিদা আক্তার ছেলে ইয়াসিন আরাফাতকে নিয়ে গত তিনদিন যাবত ভর্তি আছেন হাসপাতালে।জাহিদা আক্তার বলেন, প্রথমদিন খাবার পাইনি। এরপর থেকে পেয়েছি। সকালে ডিম, কলা আর চিড়া দিয়েছিল। গতকাল দুপুরে মাংস দিয়েছিল দুই পিস। হাসপাতালের খাবার হিসেবে ভালোই আছে।খাবার বণ্টনের দায়িত্বে থাকা আব্দুল বারি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক স্যারের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা খাবার বিতরণ করি। কোনো ওয়ার্ডে ১৩ জন, কোনোটায় ৭ জন এইভাবে দিয়ে থাকি। কীভাবে সাতজন এবং ১৩ জন নির্ধারণ করা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বারি বলেন, ‘স্যারই আমাদেরকে তালিকা দিয়ে দেন। সে অনুযায়ী কাজ করি।’খাবার বণ্টনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সিএমটি ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী মহসিন আলী জাগো নিউজকে বলেন,‘বিশেষ দিবসে যে খাবার দেওয়া হয় সেদিন মূলত জিরা অথবা কাটারি চাল ব্যবহার করা হয়।’পথ্যের তথ্য অনুযায়ী প্রশ্ন করা হলে মহসিন চৌধুরী বলেন, আমার জানামতে আমি জিরা চালই কিনেছিলাম। অসুস্থতার কারণে অনেকদিন বাইরে থাকায় হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখনো বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। সবকিছুর বরাদ্দ এখনো ১০০ শয্যার জন্যই আসে। যার কারণে খাবারের যে বরাদ্দ সেটিও ১০০ জন রোগীর। এরপরও প্রতিদিন আমরা ১৪০ থেকে ১৫০ জন রোগীকে খাবার দিয়ে থাকি। যাদেরকে একটু অসহায় মনে হয়, তাদেরকে দেখে দেখে খাবার দেওয়া হয়।তিনি বলেন, ২৫০ শয্যার বরাদ্দ পেলে দ্রুত এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো। খাবার নিয়ে অভিযোগ থাকলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ads

নওগাঁয় সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলার হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের খাবারের বরাদ্দ কম থাকায় চরম দুর্ভোগে রোগীরা

আপডেট সময় : ১০:৩৬:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রোগীর তুলনায় খাবারের বরাদ্দ কম থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের। কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতাল ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও খাবারের বরাদ্দ এখনো ১০০ জনেরই রয়ে গেছে। ফলে যাদেরকে দেখে একটু অসহায় মনে হয় কেবল তাদেরকেই খাবার সরবরাহ করা হয়। সোমবার (১৯ আগস্ট) সরেজমিনে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, এদিন দুপুরে রোগীদের খেতে দেওয়া হয় মাছ, ভাত এবং সবজি। হাসপাতালের দেওয়া পথ্যের তালিকা অনুযায়ী মাছের জাত এবং সবজি ঠিক থাকলেও ভাতের সঙ্গে ছিল চালের অসঙ্গতি। পথ্য তালিকা অনুযায়ী রোগীদেরকে খাওয়ানোর কথা জিরা অথবা কাটারিভোগ জাতের চালের ভাত। কিন্তু হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায় রোগীদের খাওয়ানো হচ্ছে স্বর্ণা-৫ জাতের চালের ভাত। নওগাঁ শহরের মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাসুমা আক্তার। ৬৫ বছর বয়সি বৃদ্ধা মাকে চিকিৎসার জন্য সাত দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করান।মাসুমা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, মাকে নিয়ে সাত দিন থেকে হাসপাতালে ভর্তি আছি। এই সাতদিনে কোনো প্রকার খাবার হাসপাতাল থেকে পাইনি। রাজশাহী বা অন্য জায়গাতেও চিকিৎসার সময় দেখেছি হাসপাতাল থেকে খবার দেয়। এই রুমে যতগুলো রোগী আছে এই কয়দিনে কেউই খাবার পাননি। আমাদের বাসা না হয় কাছে, তিনবার খাবার আনতে পারি। কিন্তু যারা দূরের, তারাতো একদম অসহায় অবস্থায় আছে।ষষ্ঠ তলার ৬০৮নং বেডে হার্টের সমস্যা নিয়ে বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলা থেকে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ৭০ বছর বয়সী সায়তুন খাতুন। তার সঙ্গে থাকা মেয়েরও একই অভিযোগ। তিনি বলেন, চারদিন যাবত মাকে নিয়ে হাসপাতালে আছি। কোনো ধরনের খাবার পাইনি। নওগাঁ সদর উপজেলার হাসাইগাড়ী ইউনিয়নের কাটখইল গ্রামের বাসিন্দা জাহিদা আক্তার ছেলে ইয়াসিন আরাফাতকে নিয়ে গত তিনদিন যাবত ভর্তি আছেন হাসপাতালে।জাহিদা আক্তার বলেন, প্রথমদিন খাবার পাইনি। এরপর থেকে পেয়েছি। সকালে ডিম, কলা আর চিড়া দিয়েছিল। গতকাল দুপুরে মাংস দিয়েছিল দুই পিস। হাসপাতালের খাবার হিসেবে ভালোই আছে।খাবার বণ্টনের দায়িত্বে থাকা আব্দুল বারি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক স্যারের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা খাবার বিতরণ করি। কোনো ওয়ার্ডে ১৩ জন, কোনোটায় ৭ জন এইভাবে দিয়ে থাকি। কীভাবে সাতজন এবং ১৩ জন নির্ধারণ করা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বারি বলেন, ‘স্যারই আমাদেরকে তালিকা দিয়ে দেন। সে অনুযায়ী কাজ করি।’খাবার বণ্টনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সিএমটি ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী মহসিন আলী জাগো নিউজকে বলেন,‘বিশেষ দিবসে যে খাবার দেওয়া হয় সেদিন মূলত জিরা অথবা কাটারি চাল ব্যবহার করা হয়।’পথ্যের তথ্য অনুযায়ী প্রশ্ন করা হলে মহসিন চৌধুরী বলেন, আমার জানামতে আমি জিরা চালই কিনেছিলাম। অসুস্থতার কারণে অনেকদিন বাইরে থাকায় হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখনো বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। সবকিছুর বরাদ্দ এখনো ১০০ শয্যার জন্যই আসে। যার কারণে খাবারের যে বরাদ্দ সেটিও ১০০ জন রোগীর। এরপরও প্রতিদিন আমরা ১৪০ থেকে ১৫০ জন রোগীকে খাবার দিয়ে থাকি। যাদেরকে একটু অসহায় মনে হয়, তাদেরকে দেখে দেখে খাবার দেওয়া হয়।তিনি বলেন, ২৫০ শয্যার বরাদ্দ পেলে দ্রুত এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো। খাবার নিয়ে অভিযোগ থাকলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।