নওগাঁয় কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা
- আপডেট সময় : ০৭:৩৭:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪ ৭১ বার পড়া হয়েছে
নওগাঁ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় টুং, টাং শব্দে মুখরিত বিভিন্ন এলাকার কামার পল্লী। এই শব্দই জানান দিচ্ছে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা সন্নিকটে। ঈদের আর মাত্র ৭-৮ দিন বাকি। তাই কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দিন-রাত সমান তালে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁ সদরসহ বিভিন্ন এলাকার কামার শিল্পীরা।
রবিবার (৯ জুন) রবিবার চকগৌরির হাট হাঁপানিয়া ও বাদিমপুর বলিহার নওহাটার মোড় চৌমাশিয়া বাজার সরস্বতীপুর কদমতলীর শ্রী শোকেস চন্দ্র কর্মকার কামার পল্লীতে সরেজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। গত কয়েকদিন ধরেই তারা ভোর থেকে মাঝ রাত পর্যন্ত দা, ছুরি, বঁটি সহ অন্যান্য সরঞ্জাম তৈরি ও মেরামতের কাজ করছেন। সময় যত ঘনিয়ে আসছে বেচা-কেনাও বাড়ছে তাদের। শেষ মুহূর্তে দম ফেলার সময় নেই কামারদের। কয়েকটি কামারের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি দোকানে ৩-৪ জন কর্মকার কোরবানির গরু কাটার সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত।
তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পুরনো দা, বঁটি ধার দিতে মজুরি ১০০ টাকা থেকে ১২৫-১৫০ টাকা। গরু জবাইয়ের ১৮ ইঞ্চি সাইজের বড় ছুরি তৈরি করতে খরচ হচ্ছে ১৮০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা, চাপাতি প্রতি পিস খরচ হচ্ছে ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে। নিজ লোহা সরবরাহে মজুরি ৪০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, প্রতি পিস বঁটি ৩০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা, দা ৪০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা।
আতোয়ার আলী নামে এক ক্রেতা বলেন, অন্যান্য বারের তুলনায় এ বছর কোরবানির গরু কাটার সরঞ্জামের দাম অনেক বেশি। গত বছর গরু জবাইয়ের বড় ছুরি ক্রয় করেছি ১৪০০ টাকা, এবার একই ছুরি বিক্রি হচ্ছে ২০০০ টাকায়। একাধিক কামার শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সারা বছর দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি প্রভৃতি বিক্রি করে যে ব্যবসা হয়, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ব্যবসা হয় কোরবানির ঈদে। ব্যবসায়ী বিরেন কর্মকার জানায়, এই কাজ তারা বংশানুক্রমে করে আসছেন। এ পেশায় বর্তমানে যারা রয়েছেন তারা বেশিরভাগই বাপ-দাদার ব্যবসাকে আঁকড়ে ধরে আছেন। অখিল কর্মকার নিতাই কর্মকার ।
রতন কর্মকার নামের এক ব্যবসায়ী জানান, কামার শিল্পীদের দৈনিক মজুরি ও লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় এ বছর কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সরঞ্জাম। নওগাঁ সুতিহাট দেলাবাড়ি চৌবাড়িয়া হাটের কামার পট্টিতে প্রতিটি দোকানে এখন দৈনিক গড়ে ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এই মৌসুমে প্রতি দোকান মালিক প্রায় লাখ টাকার মতো আয় করেন। আর কামার শিল্পীরা ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করেন বলে জানা যায়। সারা বছর কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা তেমন দেখা না গেলেও কোরবানির ঈদ এলে ব্যস্ততা বেড়ে যায় অনেক বেশি।