ঢাকা ১২:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধুনটে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিশু শিক্ষার্থী নিহত

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ০৬:৩১:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪ ১৩৩ বার পড়া হয়েছে

Oplus_131072

বগুড়ার ধুনটে বালু দস্যু রায়হান মন্ডল ওরফে মনুর অবৈধ কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টরে চাকার নিয়ে পিষ্ট হয়ে আহসান হাবিব (৭) নামের এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার ৭ মে দুপুরে উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের আড়কাটিয়া গ্রামের গুচ্ছ গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থী আহসান হাবিব ওই গ্রামের মুঞ্জু সরকারের ছেলে ও ধুনট আল কুরআন একাডেমির শিক্ষার্থী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে আড়কাটিয়া গুচ্ছ গ্রামের পাশ থেকে মাটি ও বালি বিক্রি করে আসছে সুলতানহাটা গ্রামের বাঘা মন্ডলের ছেলে রায়হান মন্ডল ওরফে মনু।

ঘটনার দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি যাওয়ার পর পাশেই ইছামতি নদীতে গোসল করতে যায় আহসান হাবিব। সেখানে পৌঁছানোর পর সম্মুখ ও বিপরীত দিক থেকে আসা বেপরোয়া দুটি ট্রাক্টরের মাঝে চাপা পড়ে পৃষ্ট হয় আহসান হাবিব।

পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু আহসানকে মৃত ঘোষনা করে। নিহত শিশুর বাবা মুঞ্জু সরকার বলেন, এ ঘটনায় ধুনট থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অপর দিকে ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত এক্সেভেটর (খননযন্ত্র) ভাংচুর ও ট্রাক্টরে অগ্নিসংযোগ করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সেখানে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে ঘটনার পর থেকে রায়হান ও তার সহযোগিরা পলাতক রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন জানান, ঘটনার পর খবর পেয়ে আমি ধুনট থানাকে অবগত করেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন রায়হান মন্ডল ওরফে মনু এখান থেকে মাটি ও বালু বিক্রি করে। আমার জানামতে তাদের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টরের চাকায় পৃষ্ট হয়ে আহসান হাবিব নামের শিশুটির মৃত্যু হয়।

জানা যায়, প্রায় সারা বছরই উপজেলা জুড়ে বালু ও মাটি নিয়ে বেপরোয়া ভাবে চলাচল করে মরনযান খ্যাত ট্রাক্টর। পুকুর সংস্কারের নামে পুকুরের মাটি ও ইট ভাটায় মাটি বহনের কাজে নিত্যদিন প্রকাশ্যে সড়কে চলাচল করছে এই ট্রাক্টর। প্রশাসনের তেমন নজরদারি না থাকায় ট্রাক্টর চালকেরা সড়কে মাত্রারিক্ত গতিতে চলাচল করার ফলে অনেক সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পঙ্গু হয়ে যায় অনেকে৷ ট্রাক্টর চালকদের নেই কোন ডাইভিং লাইসেন্স তারপরও কিভাবে এরা সড়কে চলাচল করে জানা নেই স্থানীয়দের।

অভিযোগ রয়েছে প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই নাকি সড়কে চলছে মরনযান খ্যাত এই ট্রাক্টর। শিশু আহসান হাবীব ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার পরেও প্রশাসনের টনক নড়বে কি? বন্ধ হবে কি উপজেলার আনাচে-কানাচে চষে বেড়ানো এই ট্রাক্টরের দাপট? নাকি আরও কোন শিশু, বৃদ্ধ বা যুবকের প্রাণ হারাতে হবে ট্রাক্টর নামক এই মরণযানের চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রশ্ন অনেকের।

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ সৈকত হাসান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ads

ধুনটে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিশু শিক্ষার্থী নিহত

আপডেট সময় : ০৬:৩১:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

বগুড়ার ধুনটে বালু দস্যু রায়হান মন্ডল ওরফে মনুর অবৈধ কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টরে চাকার নিয়ে পিষ্ট হয়ে আহসান হাবিব (৭) নামের এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার ৭ মে দুপুরে উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের আড়কাটিয়া গ্রামের গুচ্ছ গ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থী আহসান হাবিব ওই গ্রামের মুঞ্জু সরকারের ছেলে ও ধুনট আল কুরআন একাডেমির শিক্ষার্থী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে আড়কাটিয়া গুচ্ছ গ্রামের পাশ থেকে মাটি ও বালি বিক্রি করে আসছে সুলতানহাটা গ্রামের বাঘা মন্ডলের ছেলে রায়হান মন্ডল ওরফে মনু।

ঘটনার দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি যাওয়ার পর পাশেই ইছামতি নদীতে গোসল করতে যায় আহসান হাবিব। সেখানে পৌঁছানোর পর সম্মুখ ও বিপরীত দিক থেকে আসা বেপরোয়া দুটি ট্রাক্টরের মাঝে চাপা পড়ে পৃষ্ট হয় আহসান হাবিব।

পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু আহসানকে মৃত ঘোষনা করে। নিহত শিশুর বাবা মুঞ্জু সরকার বলেন, এ ঘটনায় ধুনট থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অপর দিকে ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত এক্সেভেটর (খননযন্ত্র) ভাংচুর ও ট্রাক্টরে অগ্নিসংযোগ করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সেখানে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে ঘটনার পর থেকে রায়হান ও তার সহযোগিরা পলাতক রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন জানান, ঘটনার পর খবর পেয়ে আমি ধুনট থানাকে অবগত করেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন রায়হান মন্ডল ওরফে মনু এখান থেকে মাটি ও বালু বিক্রি করে। আমার জানামতে তাদের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টরের চাকায় পৃষ্ট হয়ে আহসান হাবিব নামের শিশুটির মৃত্যু হয়।

জানা যায়, প্রায় সারা বছরই উপজেলা জুড়ে বালু ও মাটি নিয়ে বেপরোয়া ভাবে চলাচল করে মরনযান খ্যাত ট্রাক্টর। পুকুর সংস্কারের নামে পুকুরের মাটি ও ইট ভাটায় মাটি বহনের কাজে নিত্যদিন প্রকাশ্যে সড়কে চলাচল করছে এই ট্রাক্টর। প্রশাসনের তেমন নজরদারি না থাকায় ট্রাক্টর চালকেরা সড়কে মাত্রারিক্ত গতিতে চলাচল করার ফলে অনেক সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পঙ্গু হয়ে যায় অনেকে৷ ট্রাক্টর চালকদের নেই কোন ডাইভিং লাইসেন্স তারপরও কিভাবে এরা সড়কে চলাচল করে জানা নেই স্থানীয়দের।

অভিযোগ রয়েছে প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই নাকি সড়কে চলছে মরনযান খ্যাত এই ট্রাক্টর। শিশু আহসান হাবীব ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার পরেও প্রশাসনের টনক নড়বে কি? বন্ধ হবে কি উপজেলার আনাচে-কানাচে চষে বেড়ানো এই ট্রাক্টরের দাপট? নাকি আরও কোন শিশু, বৃদ্ধ বা যুবকের প্রাণ হারাতে হবে ট্রাক্টর নামক এই মরণযানের চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রশ্ন অনেকের।

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ সৈকত হাসান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।