জি আই স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বগুড়ার দই নিয়ে চলছে নানান কারসাজি
- আপডেট সময় : ০৭:০৮:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪ ৬৭ বার পড়া হয়েছে
বগুড়ার শেরপুরের উৎপন্ন ঐতিহ্যবাহী দই জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) পণ্যের স্বীকৃতি লাভ করলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের চক্রান্তে দই নিয়ে চলছে নানান কারসাজি। এর ঐতিহ্য রক্ষা নিয়ে শঙ্কিত সুধীজনেরা।
দু’শ বছরের বেশি সময়কাল ধরে ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বগুড়ার শেরপুরের দই।
বগুড়ার দই সম্প্রতি জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) পন্যের স্বীকৃতি লাভ করেছে। কিন্তু এই দইকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা ব্যবসাইয়িক লাভের উদ্দেশ্যে নানা কারসাজিতে মেতে উঠেছে।
বগুড়ার দইয়ের নাম শোনেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের তালিকায় অনেক আগে থেকেই ভোক্তার মনে বগুড়ার দই স্থান করে নিয়েছে।
জনপ্রিয়তার দিক থেকেও দারুণভাবে এগিয়ে স্থানীয় এ খাবারটি। একসময় শেরপুর উপজেলার ঘোষপাড়া এলাকার ঘোষ পরিবারের গুটকয়েক সদস্য এই দই প্রস্তুত এর পেশায় নিয়োজিত ছিলো।
বর্তমানে এ পেশায় জড়িত হয়েছে হাজার হাজার পরিবার বা প্রতিষ্ঠান। খেতে সুস্বাদু বগুড়ার দই ঢাকাসহ সারা দেশের হোটেল, রেস্তোরা, রেলওয়ে স্টেশন ও বাস স্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
ঐতিহ্যবাহী এই পণ্যের ক্রেতা আকৃষ্ট করতে খুব বেশি হাঁকডাকের প্রয়োজন পরেনা। এটি ইতিহাস সমৃদ্ধ। বগুড়া ছাড়াও দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বগুড়ার দইয়ের উপস্থিতি মেলে। শত বছরের এই খাদ্য পণ্যটি এখন শিল্পে রূপ নিয়েছে।
দীর্ঘদিন অনুসন্ধানের পর দেখা যায় ঐতিহ্যবাহী এই পণ্যটিকে পুঁজি করে কিছু অসৎ ব্যবসায়ী রাতারাতি টাকার পাহাড় গড়তে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বগুড়ার বারোটি উপজেলাতেই এখন অসংখ্য প্রতিষ্ঠান দই প্রস্তুত করছে। এর মধ্যে শেরপুর উপজেলা অন্যতম। এই উপজেলাতে দই মিষ্টির সেলিং পয়েন্ট এবং শোরুমের সংখ্যা শতাধিক।
আর দিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ এবং স্থানীয় বিক্রি প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। সে হিসেবে মাসে ১কোটি ৫০ লক্ষ আর বিভিন্ন উৎসব মিলিয়ে বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকার দই বিক্রি হয়। দইয়ের চাহিদার কারণে রাজধানী ঢাকা শহরসহ দেশের অনেক শহরেই এখন শোরুম বা বিক্রয় কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। দইয়ের এই জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও কালো টাকার মালিক নিরাপদ খাত হিসেবে নেমে পড়েছে দই ব্যবসায়।
এরা এক কেজি দামের যে দই বিক্রি করছে তাদের প্রকৃত দই থাকছে সাড়ে ৫০০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রাম। কোন কোন ক্ষেত্রে তার চেয়েও কম। দই এর চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে কতিপয় অসাধু প্রস্তুতকারক ওজনে কম দেওয়া সহ ফরমালিন মিশিয়ে জালিয়াতি করে চলেছে। দই ও মিষ্টান্ন সামগ্রী উৎপাদনে এখন বস্তার নিম্নমানের গুড়া দুধ ব্যবহার করা হয়।
সবচেয়ে মারাত্মক হলো দই ৫-৭দিন রাখার জন্য প্রিজারভেটিভ এর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার। তাছাড়া চিনির পরিবর্তে ছ্যাকারিন এবং রং মিশিয়ে তৈরি করছে দই। উপজেলার মির্জাপুর এলাকা সহ প্রত্যন্ত এলাকার কিছু দইয়ের কারখানাগুলোতে এর সত্যতা পাওয়া যায়।
এ প্রসঙ্গে বগুড়া বি এস টি আই এর সহকারী পরিচালক (সি এম) প্রকৌশলী মো.মেসবাউল হাসান মুঠো ফোনে বলেন, এমন বিষয় আমাদের জানা নাই, নাম দিয়ে সহযোগীতা করলে অবশ্যই ব্যাবস্থা নেব।