আদমদীঘিতে আমন চারা রোপণে ব্যস্ত কৃষক। চলছে রোপণ ও পরিচর্যা
- আপডেট সময় : ০৫:৩৬:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪ ৫৪ বার পড়া হয়েছে
আষাড়ে তেমন বৃষ্টি হয়নি। ছিল তীব্র খরা। শ্রাবনের প্রথম সপ্তাহেও দেখা মেলেনি বৃষ্টির। কৃষকেরা আমনের চারা রোপণ নিয়ে ছিলেন শঙ্কায়। অবশেষে শ্রাবনের দ্বিতীয় সপ্তাহে অঝোর ধারায় বর্ষা নামে। জমি ভরে উঠে পানিতে। শুরু হয় খেতে চাষ দিয়ে আমন রোপণের তোড়জোড়। তবে বগুড়ার আদমদীঘিতে দেখা দিয়েছেল শ্রমিক সংকট। প্রতি বছর এ সময় বিভিন্ন জেলা থেকে মৌসুমী কৃষক আসে। এ বছর রাজনৈতিক কারনে ট্রেন বন্ধ থাকায় ঐ সকল কৃষক আসে নাই।এ কারণে চারা রোপণ ধীরগতিতে হচ্ছে। ফলে এই সময় কৃষক সংকট কেটে গেছে। তবে কিছু এলাকায় কৃষকরা অগ্রিম রোপন করায় সেসব জমিতে কৃষকরা এখন আগাছা পোকামাকড় দমনে ব্যস্ত সময় পার করছে। কোন রকম
সংকট আর নেই বলে জানালেন উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা। উপজোর দমদমা গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন জানান প্রায় ৯০ ভাগ জমিতে ধান রোপণ সম্পূর্ন হয়েছে। একদম নীচু এলাকায়ও আগামী এক সপ্তাহে ধান রোপণ শেষ হবে। বর্তমানে বড় ধরনের কোস সংকট নেই আমন চাষে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় চলতি মৌসুমে ১২০০ হাজার ১০০ শত হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১১০০ একর আমন ধান কৃষকেরা রোপন করেছে। আমন
ধান রোপনে বর্তমানে কৃষকেরা ব্যস্ত সময় পার করছে।
মৌসুমের শুরুতে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় অনেক কৃষক গভীর-অগভীর নলকুপ চালু করে খেতে সেচ দিয়ে হালচাষ করেছেন। কিন্তু উপজেলার অনেক এলাকায় সেচের সুবিধা নেই। এ কারনে জমি অনাবাদি পড়ে ছিল। অবশেষে বৃষ্টি শুরু হয়। চলে টানা কয়েক দিন যা আমন চাষের জন্য ছিল অনুকূল। শুরু হয় খেত তৈরি ও চারা রোপণের ধুম। এরপর আবার বৃষ্টির না হওয়াতে কৃষকরা চিন্তায় পড়ে। আবার আগষ্টে তৃতীয় সপ্তাহে একটানা বৃষ্টি হওয়াতে কৃষককের মুখে হাসি ফুটেছে। উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে কৃষিজমির মাঠ পানিতে থই থই করছে। কৃষকেরা খেতে হালচাষ দেওয়া ও চারা রোপণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কোন কোন অঞ্চলে ধান বোনার কাজ শেষ হয়েছে। তবে চাহিদা মতো কৃষিশ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারনে চারা রোপণের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ৩০-৩৫ জন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে তাঁদের এলাকার চাষিরা আমন চাষে বৃষ্টির উপর ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। কারন এ এলাকার গভীর ও অগভীর নলকুপের মাধ্যম ভৃগভর্স্থ পানি তোলা যায় না। পানির অভাবে তাঁরা বোরোর আবাদ করতে পারেন না। বৃষ্টি নির্ভর এই আমনের আবাদ করেই তাঁদের সারা বছরের খাবার চলে। কিন্তু এ বছর মৌসুমের শুরুতে বুষ্টিপাত হয়নি। তাঁরা খুব দুশ্চিন্তায় ছিলেন। বৃষ্টির অভাবে আমনের আবাদ করতে পারবেন কি না, সে আশঙ্কা তাঁদের তাড়া
করছিল। কয়েকদিন ভারী বর্ষণ হয়েছে। পর্যাপ্ত বুষ্টিতে মাঠে পানি জমে যাওয়ায় প্রাণ ফিরে পেয়েছেন তাঁরা। তবে একসঙ্গে সবাই খেতে হালচাষ ও চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছেল, তবে এখন তা কেটে গেছে। কৃষকরা আরও জানান এত দিন শ্রমিকেরা কাজ না পেয়ে অলস সময় পারকরছিল। হঠাৎ অনেক প্রতিক্ষার বৃষ্টি হওয়ায় সবাই একসঙ্গে খেত তৈরি এবং রোপা আমনের চারা রোপণ শুরু করায় কলের লাঙল ও কৃষিশ্রমিকেরা সংকট দেখা দিয়েছে। রোজ ৩০০ টাকায় যে শ্রমিক পাওয়া যেত তাঁকে এখন ৩৫০ টাকাতেও পাওয়া যাচ্ছে না। উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠু চন্দ্র অধিকারী বলেন, এখনকার বৃষ্টি কৃষকদের
জন্য আর্শিবাদ হয়ে এসেছে। ইতিমধ্যে উপজেলার ৯০ শতাংশ জমিতে আমন রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। এই বৃষ্টিতে বাকি জমিতে আমনের চারা রোপণ হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, একসঙ্গে সব চাষি চারা রোপণ শুরু করায় কৃষিশ্রমিকের একটু সংকট দেখা দিয়েছে। তবে কৃষকদের ভয় পাবার কিছু নাই। ভাদ্র মাসের ১০-১২ দিন পর্যন্ত আমনের চারা রোপণ করা যাবে। একটু
মন্থরগতিতে হলেও কৃষকেরা এই সময়ের মধ্যে তাঁদের খেতে চারা রোপণ সম্পন্ন করতে পারবেন। উপজেলায় ৫০০ কৃষকের মাঝে সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এতে কৃষকরা খুশিমনে আমন আবাদের কাজ করছে।